গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম ও তাঁর স্ত্রী সাবিনা আলমের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রথম আলোকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।
চিঠিতে দুদক বলেছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে আশরাফুল আলম ও সাবিনা আলমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ থাকার তথ্য মেলায় এই নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
দুদকের মুখপাত্র প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সংস্থার পরিচালক কাজী শফিকুল আলমের সই করা আলাদা আলাদা নোটিশ আশরাফুল আলম ও সাবিনা আলমের গুলশানের বাসার ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে। নোটিশে তাঁদের ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে কমিশনের স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, তাঁরা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাই নোটিশ পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের নিজেদের, নির্ভরশীল ব্যক্তিদের যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণ নির্ধারিত ফরমে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মেফতাহুল জান্নাত।
গত ৩১ ডিসেম্বর গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পান আশরাফুল আলম। তার আগে তিনি ওই অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন।
গত বছর শুদ্ধি অভিযানে গ্রেপ্তার হন ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম (জি কে শামীম)। তাঁর সঙ্গে যোগসাজশের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গণপূর্ত অধিদপ্তরের বেশ কয়েকজন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদক। এঁদের মধ্যে সাবেক তিন প্রধান প্রকৌশলীর পাশাপাশি বেশ কয়েকজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আছেন।
অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুদক ইতিমধ্যে ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বাকিদেরও শিগগির জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে।
পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন ১১ জন প্রকৌশলী।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে যে অনুসন্ধান চলছে, সেটা শুদ্ধি অভিযানসংশ্লিষ্ট নয়। গত বছরের আগস্টে তাঁর বিরুদ্ধে এই অনুসন্ধান শুরু হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আশরাফুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠালেও উত্তর দেননি।