ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া এলাকায় আল–আমিন (১৩) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রের হত্যার ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পাঁচ সদস্য। তাঁরা উপপরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
গতকাল বুধবার রাতে এই পাঁচজনকে একটি ঘরে আটকে মারধর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। আহত কর্মকর্তাদের মধ্যে দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি তিনজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
আহত পাঁচজন কর্মকর্তা হলেন ঝিনাইদহ পিবিআইয়ের এসআই হাফিজুর রহমান, সোহেল রানা, এএসআই আবদুল খালেক, হুমায়ুন কবির ও জাফর আলী।
ঘটনার বিষয়ে আহত এসআই হাফিজুর রহমানের ভাষ্য, গতকাল সকাল থেকে ক্লুলেস একটি হত্যা মামলা তদন্তের জন্য তাঁরা আড়পাড়া গ্রামে অবস্থান করছিলেন। রাত ১০টার দিকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়। এরপর আগেই গ্রেপ্তার হওয়া আসামি সাব্বির আহম্মদকে ওই ছুরি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। এ সময় আসামির স্বজনেরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাঁদের মারধর শুরু করেন। ঘটনার সময় হামলার শিকার অন্যরা নিরাপদ স্থানে যেতে পারলেও তাঁকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে ফেলেন তাঁরা। এরপর মারধর করা হয়।
খবর পেয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া একদল পুলিশ নিয়ে আড়পাড়া এলাকার মুশফিকুর রহমান ওরফে ডাবলুর বাসা থেকে এসআই হাফিজুর রহমানকে উদ্ধার করেন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা. মাহফুজুর রহমান মিয়া এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আহত হাফিজুর রহমানকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, হামলায় পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। হামলা করে হত্যাকাণ্ডের আলামত ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আসামি সাব্বিরের বাবা মুশফিকুর রহমান ওরফে ডাবলু ও চাচা লাভলুকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় আজ বৃহস্পতিবার মামলা করা হবে।
তবে কালীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পিবিআইয়ের হাতে আটক আসামিদের চাচা মোস্তাফিজুর রহমানের দাবি, হত্যার মোটিভ উদ্ধারের নামে ছোট দুটি বাচ্চাকে ফাঁসানোর আয়োজন করা হচ্ছিল। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটেছে।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়ায় আল-আমিন নামে এক মাদ্রাসাছাত্রকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। মামলাটি মোটিভ ও ক্লুলেস ছিল। তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাব্বির ও হৃদয় নামে দুই যুবককে পিবিআই আটক করে। তাঁদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক গতকাল রাতে ওই এলাকায় অধিকতর তদন্তের জন্য গেলে পিবিআইয়ের পাঁচজন হামলার শিকার হন।