বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ক্যাসিনো থেকে দিনে ৭০ হাজার করে মাসে ২১ লাখ টাকা নিতেন। মোহামেডান ক্লাবের ওই ক্যাসিনো চালাতেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাইদ। ক্লাবটিতে ক্যাসিনো ব্যবসার ভাড়া বাবদ তিনি ওই টাকা নিতেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এই তথ্যের সত্যতা মিলেছে। অনুসন্ধানের তথ্য বলছে, ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে পাওয়া ৪১ কোটি টাকা অস্ট্রেলিয়ার এএনজেড এবং কমনওয়েলথ ব্যাংকে রাখতেন বলে দুদক জেনেছে।
এসব তথ্য উঠে এসেছে লোকমানের বিরুদ্ধে করা দুদকের মামলার এজাহারে। ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আজ রোববার মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়, লোকমান হোসেন ভূঁইয়া তাঁর আয়কর নথিতে নিজ নামে অর্জিত ৭৩ লাখ ৭০ হাজার ৬৬৪ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে পাওয়া তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি তাঁর নিজ নামে এবং তাঁর স্ত্রী–সন্তানদের সঙ্গে যৌথভাবে বিভিন্ন ব্যাংকে ২ কোটি ৯৬ লাখ ২৮ হাজার ৯৮৪ টাকা জমা রেখেছেন। এ অর্থ আয়ের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। সব মিলিয়ে তাঁর অবৈধ সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ টাকা।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের শুরুর দিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে লোকমানকে রাজধানীর মণিপুরি পাড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তেজগাঁও (ডিএমপি) থানায় মামলা করা হয়।
লোকমান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কারাগারে থাকা লোকমানকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য কাল সোমবার আদালতে আবেদন করবে দুদক। তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যও আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।