কোটাপদ্ধতি সংস্কার চেয়ে করা মিছিল থেকে আবারও আটক করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের। এ সংখ্যা কমপক্ষে ৫০ জন বলে দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এদিকে পুলিশ বলছে, দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ায় এবং ইটপাটকেল ছোড়ায় থানা থেকে তাঁদের আটক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কয়েকজন আন্দোলনকারী বলেন, আজ বুধবার হাইকোর্ট মোড়ে আন্দোলন করার সময় তাঁদের পাঁচজনকে আটক করে পুলিশ। ওই আটক ব্যক্তিদের ছাড়াতে তাঁরা রমনা থানায় গেলে আরও কমপক্ষে ৫০ জনকে আটক করে পুলিশ।
জানতে চাইলে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলনকারীদের চলে যেতে বারবার অনুরোধ করলেও তাঁরা ফিরে যাননি। পরে তাঁরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় কয়েকজনকে আটক করা হয়। পরে আরও ৪০-৪৫ জনকে থানায় আটক করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কখন ছেড়ে দেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা জানা নেই। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার মামলাও হতে পারে।’
আজ সকালে কোটা সংস্কারের দাবিতে চাকরিপ্রত্যাশীদের বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করেছে। পাঁচ দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভকারীরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে হাইকোর্ট মোড়ে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ও লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে অনেকে আহত হন।
বিক্ষোভকারীরা দাবি করেছেন, এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৬ জন বিক্ষোভকারী আহত হন। পাঁচজনকে পুলিশ আটক করেছে। তাঁদের এক ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে না দিলে বিকেলে তাঁরা আবার বিক্ষোভ করবেন বলে জানান। হামলার প্রতিবাদে আগামী রোববার সন্ধ্যা সাতটায় মোমবাতি প্রজ্বালন করা হবে বলে জানান তাঁরা।
আজ সকাল ১০টার দিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা গ্রন্থাগারের ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ এতে বাদ সাধে। গ্রন্থাগারের দরজা বন্ধ করতে চাইলে আন্দোলনকারীরা বাধা দেন। তাঁরা গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষকে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা না দেওয়ার অনুরোধ করেন।
পরে কয়েক হাজার আন্দোলনকারী শাহবাগে ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে মিছিল বের করেন। এ সময় তাঁরা কোটা সংস্কারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া, কোটায় কোনো ধরনের বিশেষ পরীক্ষা না নেওয়া, সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা এবং চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটাসুবিধা একাধিকবার ব্যবহার না করা।