কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত দুজনের পরিচয় জানা গেছে। তাঁরা হলেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ডেইলপাড়ার কালু মিয়ার ছেলে আবদুস শুক্কুর (৫৫) ও আবদুস শুক্কুরের ছেলে মো. ইলিয়াস (২৬)। বিজিবি সূত্র এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
আজ শুক্রবার ভোর সোয়া পাঁচটার দিকে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের পুরোনো মগপাড়া কাঁকড়া খামার এলাকায় ওই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পৃথক আরেকটি ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২ জন নিহত হন। তাঁরা হলেন নাজির আহমদ ওরফে নাজির ডাকাত (৪০) ও গিয়াস উদ্দিন (৩০)। পুলিশ ও বিজিবির দাবি, নিহত ব্যক্তিরা মাদক ব্যবসা ও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
বিজিবির ভাষ্য, টেকনাফের সাবরাং পুরোনো মগপাড়া কাঁকড়া খামার এলাকায় আজ ভোর সোয়া পাঁচটার দিকে বন্দুকযুদ্ধে দুজন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হন। তাঁরা ঘটনাস্থলে ইয়াবার চালান পাচার করতে গিয়েছিলেন। এ সময় বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তাঁরা নিহত হন। পরে দুজনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। তাঁরা একই পরিবারের সদস্য বলে জানা যায়। ঘটনাস্থল থেকে ১ লাখ ইয়াবা বড়ি, একটি দেশে তৈরি বন্দুক ও একটি খালি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আছাদুদ জামান চৌধুরী বলেন, পুরোনো মগপাড়া কাঁকড়া খামার এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ইয়াবার চালান আসছে—এমন খবরে টেকনাফ ২ বিজিবির নায়েক সুবেদার মো. শাহ আলমের সমন্বয়ে একটি দল ওই এলাকায় টহল জোরদার করে। এ সময় দুই ব্যক্তিকে টহলদল চ্যালেঞ্জ করে। তাঁরা টহলদলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালান। এতে বিজিবির সিপাহি মো. ইমরান হোসেন আহত হন। আত্মরক্ষার্থে কৌশলগত অবস্থান থেকে গুলি ছোড়ে বিজিবির টহলদল। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একটি সরু নালা থেকে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।
অপর ঘটনায় গতকাল দিবাগত রাত দেড়টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্যং নয়াপাড়ায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নাজির আহমদ ও গিয়াস উদ্দিন নিহত হন। এর মধ্যে নাজিরের বিরুদ্ধে হত্যা, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র ব্যবসা, অপহরণ, নারী নির্যাতন ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে পাঁচটি মামলা রয়েছে। গিয়াসের বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য ও অস্ত্র ব্যবসা এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কয়েকটি মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৬ হাজার ইয়াবা বড়ি,২টি দেশে তৈরি অস্ত্র (এলজি) ও ৪টি গুলি উদ্ধার করা হয়।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, নয়াপাড়া এলাকায় কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী অবস্থান করছে—এমন খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। রাতেই তাঁদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। ময়নাতদন্তের জন্য নিহত দুজনের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এবি এমএস দোহা প্রথম আলোকে বলেন, টেকনাফে পৃথক দুটি ঘটনায় চারজনের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।