আসন্ন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধে তৎপর থাকবে র্যাব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তারা নজরদারি করবে। একই সঙ্গে প্রশ্নফাঁস রোধে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সবার সহযোগিতা চেয়েছে র্যাব।
আজ বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ। সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন হয়।
আগামী শনিবার থেকে সারা দেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।
ব্রিফিংয়ে বেনজির আহমেদ বলেন, পাবলিক পরীক্ষা এলেই একটি হুমকি দেখা যায়। তা হচ্ছে প্রশ্নপত্র ফাঁস। গত বছর প্রশ্নফাঁস রোধে র্যাব যুক্ত হয়। গত বছর সবার উদ্যোগে তারা এই হুমকি নস্যাৎ করতে পেরেছিলেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মতো জঘন্য কাজ এবারও যাতে না ঘটে, সে জন্য কাজ করবে র্যাব।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, অভিভাবকদের বলতে চাই, আপনারা কোনো ফাঁদে পা দেবেন না। শিক্ষকেরা আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধার। তারাই জাতি নির্মাণের কারিগর। গত বছর প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকায় কয়েকজন শিক্ষককে গ্রেপ্তার করতে হয়েছে। আমরা মনে করি, ওই শিক্ষকেরা শিক্ষক নন। আমরা প্রত্যাশা করব, শিক্ষক সমাজের কেউ এ কাজে জড়িত থাকবেন না। একইভাবে শিক্ষার্থীদের কাজ হচ্ছে যথাযথ পড়াশোনা করে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া। কোনো শিক্ষার্থী প্রশ্নপত্র ফাঁসে দৌড়াদৌড়ি করবে না।
গত বছরের প্রসঙ্গ টেনে বেনজির আহমেদ বলেন, প্রশ্ন ফাঁসে ও ব্যবসায় জড়িত থাকার জন্য কয়েকজন ছাত্রকে গ্রেপ্তার করতে হয়েছে। ফলে ওই ছাত্রদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যায়। যদি কোনো শিক্ষার্থীকে এ ধরনের অপপ্রয়াসে দেখা যায়, তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। গ্রেপ্তার হলে তাদের শিক্ষাজীবন বিনষ্ট হবে। র্যাব চায় না, এভাবে গ্রেপ্তার হয়ে কেউ নবীন বয়সেই জীবন ক্ষতিগ্রস্ত করুক। যদি কেউ তার বন্ধু বা সহপাঠীকে এ ধরনের কাজ করতে দেখে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তা র্যাবকে জানাবে। একইভাবে অভিভাবকেরাও এ ধরনের অপচেষ্টার পেছনে দৌড়াবেন না। এতে তাঁর ও সন্তানের ক্ষতি হতে পারে। এ জন্য প্রত্যেককে শত প্রলোভনের মুখেও বিরত থাকার অনুরোধ জানায় র্যাব।
প্রশ্নফাঁস রোধে র্যাবের নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে বেনজির আহমেদ বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধের জন্য তাদের নিজস্ব গোয়েন্দারা আছেন। এ ছাড়া অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা আছে। সবার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে র্যাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তৎপর থাকবে।
র্যাবের সক্ষমতার কথা তুলে ধরে বেনজির আহমেদ বলেন, যেসব অ্যাপস আছে, তার মাধ্যমে তদারকি করার সক্ষমতা তাদের রয়েছে। জাতীয় স্বার্থে তারা আগামী প্রজন্মের শিক্ষাজীবন নিরাপদ করবে। এ জন্য সবার সহযোগিতা চান তিনি।
র্যাবের মহাপরিচালক জানান, প্রতিটি পরীক্ষার হল তাদের বাহিনী পরিদর্শন করবে। সেখানে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে। কারও কাছে কোনো তথ্য থাকলে, তা র্যাবকে দিতে আহ্বান জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে বেনজীর আহমেদ বলেন, পরীক্ষা চলার সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার বিষয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা পালন হচ্ছে কি না—সেদিকেও খেয়াল রাখবে র্যাব।