বরগুনায় স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যার ঘটনার মাত্র দুদিন পর এবার স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। গত শুক্রবার বন্দর উপজেলার বক্তারকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
আহত শাহীন মিয়া (৪২) পেশায় রংমিস্ত্রি। তিনি জানিয়েছেন, স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ জানানোর কারণেই তাঁর ওপর এ হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই বন্দর থানায় হত্যারচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেছেন শাহীনের স্ত্রী ববি আক্তার।
মামলায় উপজেলার বক্তারকান্দি এলাকার আমজাদ হোসেন ওরফে বল্টু আমজাদ (৪২), তাঁর দুই ছেলে হৃদয় হোসেন ও আপন হোসেন, ভাই আলতাফ হোসেন এবং ভাগ্নে ফারুক হোসেনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ–ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ভোরে আলতাফকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শাহীনের পরিবারের অভিযোগ, আমজাদ অনেক আগে থেকেই শাহীনের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করেন। এ অভিযোগে এর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়। তিন দফা ভাড়া বাড়ি পাল্টিয়েছেন। তবু তাঁকে দমানো যায়নি।
খানপুরে ৩০০ শয্যার নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহীন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি থেকে দোকানে আম কিনতে যান। সেখানে তাঁর স্ত্রীকে উদ্দেশ করে আমজাদ গালিগালাজ শুরু করেন। এর প্রতিবাদ জানালে আমজাদের সঙ্গে তাঁর বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে আমজাদ, তাঁর দুই ছেলে ও কয়েকজন সহযোগী এসে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপাতে থাকেন। এ সময় স্ত্রী তাঁকে হামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয় দুজন ছুটে এসে তাঁকে (শাহীন) উদ্ধার করে একটি দোকানের ভেতরে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।
কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, আমজাদ বন্দরের বক্তারকান্দি এলাকার মৃত চান মিয়া সরদারের ছেলে। এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তিনি। শাহীনকে উদ্ধারে সহযোগিতায় করায় ওই দিন বিকেলে চাইল্ড কেয়ার কিন্ডারগার্টেন নামের একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাহেরুল ইসলামের ওপরও আমজাদ ও তাঁর সহযোগীরা হামলা করেন। আর তাহেরুলকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাঁর ভাই আকবর হোসেনকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেওয়া হয়।
বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত অন্যতম আসামি আলতাফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পলাতক আমজাদসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। আমজাদের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনসহ ১২টি মামলা রয়েছে।