আশুলিয়ার মরাগাঙ এলাকায় শাশুড়ি জরিনা খাতুনের লাশ খুঁজে বের করেন জামাতা নূর ইসলাম (২৯)। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে মামলাও করেন। তবে পুলিশ বলছে, নূর ইসলাম নিজেই জরিনা হত্যার সঙ্গে জড়িত।
গত ৯ নভেম্বর রাতে বৃদ্ধ বাবাকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে মেয়ে হত্যার ওই ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার।
পিবিআই এ ঘটনায় নূর ইসলামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার বাকি দুজন হলেন, নূর ইসলামের মা আমেনা বেগম (৪৮) ও নূর ইসলামের বিয়ের ঘটক স্বপন (৩৫)। রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই কার্যালয়ে ওই ব্রিফিং করা হয়।
পারিবারিক বিরোধের জেরে হত্যার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে বনজ কুমার মজুমদার বলেন, নিহত জরিনা বেগমের মেয়ে রোজিনার সঙ্গে বিয়ের পর থেকে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে নূর ইসলামের কলহ শুরু হয়। এক সপ্তাহ আগে এই বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। একপর্যায়ে রোজিনাকে প্রচণ্ড মারধর করেন তাঁর স্বামী নূর ইসলাম। এই বিরোধের জন্য শাশুড়ি জরিনাকে দায়ী করেন তিনি। এরপরই জরিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নূর ইসলাম। তাঁর সঙ্গে পরিকল্পনা ছিলেন মা আমেনা বেগম ও ঘটক স্বপন। এদিকে বিরোধ মেটাতে ৯ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালী থেকে মেয়ে রোজিনার বাড়ি আশুলিয়ার গাজীরচটের মুন্সীপাড়ায় বাবা আকবর আলীকে সঙ্গে নিয়ে আসেন জরিনা। দুপুরের খাবার খেয়ে ওই দিন বিকেলে বিকেলেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন জরিনা খাতুন ও তাঁর বাবা আকবর আলী। এরপরই হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়।
জরিনাকে হত্যার জন্য বাসচালকের সঙ্গে ১০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়েছিল জানিয়ে বনজ কুমার মজুমদার বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী বাসটিতে চালক, কনট্রাকটর ও দুই সহযোগী ছাড়া আর কোনো যাত্রী ওঠানো হয়নি। আর আগে থেকে বাসটি শিমুলতলা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। জরিনা ও আকবর আলী ওঠার পর বিভিন্ন জায়গায় বাসটি ঘোরানো হয়। সন্ধ্যার দিকে প্রথমে আকবর আলীকে মারধর করে নামিয়ে দেওয়া হয়। এর পর জরিনাকে মারধর করে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ফেলে দেওয়া হয়।
বনজ কুমার মজুমদার জানান, বাসটি জব্দ করা হয়েছে। হত্যার সঙ্গে জড়িত বাসচালক ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।