আটা, ময়দা ও রং দিয়ে তৈরি হচ্ছিল দুটি গ্রুপের নকল ওষুধ

দুটি গ্রুপের দুটি ওষুধ নকল করে বাজারজাত করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় দুজনকে
ছবি: সংগৃহীত

মন্টিলুকাস্ট সোডিয়াম ও প্যানট্রোপাজল সোডিয়াম সেস্কুইহাড্রেট গ্রুপের দুটি ওষুধ নকল করে বাজারজাত করা হচ্ছিল। এই নকল ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছিল আটা, ময়দা ও রং। চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যাল নামের আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরির কারখানায় তৈরির পর এগুলো আনা হতো রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার ওষুধ মার্কেটে। সেখান থেকে ব্যবসায়ীদের হাত ধরে ও কুরিয়ার সার্ভিসে ছড়িয়ে দেওয়া হয় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ওষুধের দোকানে।

এ ঘটনায় ওয়েস্ট ফার্মাসিউটিক্যালের মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও নকল ওষুধের পাইকারি বিক্রেতা আলী আক্কাস শেখকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গতকাল বুধবার রাজধানীর চকবাজার, ফকিরাপুল ও চুয়াডাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একটি গ্রুপের ১০ লাখ ৩৪ হাজার ২৮০টি নকল ট্যাবলেট ও আরেকটি গ্রুপের ১৮ হাজার নকল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা নকল ওষুধ

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, নকল ওষুধ তৈরি বড় ধরনের একটি অপরাধ। চিকিৎসকেরাও আস্থা হারান।

ডিবির প্রধান হাফিজ আক্তার বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে ডিবির লালবাগ বিভাগ চকবাজারের একটি কুরিয়ার সার্ভিস থেকে নকল ওষুধের বড় চালান আটক করে। এ সময় পাইকারি ভেজাল ওষুধ বিক্রেতা আলী আক্কাস শেখকে আটক করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যমতে ফকিরাপুল এলাকা থেকে সেসব নকল ওষুধ তৈরির কারখানার মালিক গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে দর্শনায় গিয়াস উদ্দিনের কারখানায় অভিযান চালানো হয়।

তিন-চার বছর ধরে চক্রটি এ কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এসব নকল ওষুধ তৈরিতে আটা, ময়দা, রং ব্যবহৃত হতো। এমনকি ডাই বা স্টেরয়েড ব্যবহৃত হতে পারে। নন-ফার্মাসিউটিক্যাল এসব ওষুধ সেবনে কোনো উপকার হয় না। কিডনি, লিভার, হৃদ্‌যন্ত্র বা শ্বাসতন্ত্র মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

বাজারজাত করার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নকল ওষুধগুলো প্রথমে মিটফোর্ডে আসে। এরপর সেখান থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কম দামে ছড়িয়ে দেওয়া হতো।

ডিবি প্রধান বলেন, যারাই নকল ওষুধ তৈরির চেষ্টা করবে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।