অর্থ পাচার মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খন্দকার মোহতেশাম সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ভাই। আজ মঙ্গলবার ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। খন্দকার মোহতেশাম হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। এর আগে তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম এ জলিল প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৫ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায়ও খন্দকার মোহতেশাম হোসেনের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। পাশাপাশি ঢাকার কাফরুল থানার অর্থ পাচার মামলায়ও তাঁর বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বর্তমানে কোতোয়ালি থানা হেফাজতে রয়েছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ বাদী হয়ে ২০২০ সালের ২৬ জুন ঢাকার কাফরুল থানায় অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে অর্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী-২০১৫-এর ৪ (২) ধারায় এ মামলা করা হয়। ওই মামলা তদন্ত করে গত বছরের ৩ মার্চ আদালতে বরকত, রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।
ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন আসামি সাজ্জাদ হোসেন বরকত, ইমতিয়াজ হাসান রুবেল, নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী ,এ এইচ এম ফুয়াদ ও আশিকুর ফারহান। তবে পলাতক ছিলেন খন্দকার মোহতেশাম হোসেন। সোমবার গ্রেপ্তার হওয়ায় এ মামলায় আরও চারজন পলাতক। তাঁরা হলেন মোহাম্মদ বিন আলী মিনার, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ, তরিকুল ইসলাম ও কামরুল হাসান। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
গতকাল সোমবার এ মামলায় ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বরকত, তাঁর ভাই রুবেলসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু হয়েছে। ২৪ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এই দিন ধার্য করেন।
গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি বরকত ও রুবেলের ৫ হাজার ৭০৬ বিঘা জমি ক্রোকের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে ১৮৮টি ব্যাংক হিসাবে থাকা তাঁদের প্রায় ১০ কোটি টাকা ক্রোকের আদেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁদের মালিকানাধীন ৫৫টি বাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়িও জব্দের আদেশ দেন আদালত।