ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা, সঙ্গে ১৬ নেতা-কর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার

ইডেন কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের কলেজ কমিটির ২৫ জন নেত্রী
ছবি : প্রথম আলো

দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে ক্যাম্পাসে অস্থিরতা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে রাজধানীর ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে প্রাথমিকভাবে পাওয়া প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ১৬ জন নেতা-কর্মীকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় শনিবার রাত থেকে শুরু করে রোববার দিনভর উত্তাপ ছিল ক্যাম্পাসে। সন্ধ্যায় সংঘর্ষও হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে সব মহলে চলছিল সমালোচনা।

এমন পরিস্থিতিতে ইডেন কলেজ শাখা কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। সেই সঙ্গে শৃঙ্খলাপরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ে, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা ঊর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি ও সাদিয়া জাহান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম, সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলীম জান্নাতুল ও সূচনা আক্তারকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলার সঙ্গে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যাঁরা জড়িত আছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, সভাপতি তামান্না জেসমিন ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার কিছু অনুসারী কর্তৃক ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংগঠনের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে শনিবার মধ্যরাত থেকে শুরু করে রোববার দিনভর উত্তপ্ত ছিল কলেজ ক্যাম্পাস। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধী পক্ষ রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের দুজনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বহিষ্কার দাবি করে। একই দিন সন্ধ্যার আগে কলেজ মিলনায়তনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পক্ষের সংঘর্ষ বাঁধে।

সংঘর্ষে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিনসহ দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। তামান্নাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাকে কলেজ প্রশাসন ও পুলিশের মাধ্যমে লেগুনায় করে ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসছাড়া হওয়ার খুশিতে তাঁদের বিরোধী পক্ষের নেত্রীরা ক্যাম্পাসে আনন্দমিছিল করেন। এ ঘটনায় ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কৃত নেত্রীরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধী পক্ষে ছিলেন।