করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা প্রথমে শুধু বয়স্ক ব্যক্তিদের দেওয়া হলেও দ্রুতই অনেক উন্নত দেশে বড়দের পাশাপাশি পাঁচ বছর ও তদূর্ধ্ব শিশুদেরও টিকার আওতায় আনা হয়। সিডিসির ২০২২ সালের সর্বশেষ সুপারিশ অনুযায়ী, ছয় মাস ও তদূর্ধ্ব সব শিশু এমনকি যাদের ইতিমধ্যে কোভিড হয়েছে, তাদের সবাইকে এই টিকার আওতায় আনা হবে।
ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশে শিশুরা টিকা পেয়েছে এবং টিকার কারণে বড় ধরনের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা শোনা যায়নি। ৫ বছর ও তদূর্ধ্ব সব শিশু এবং কোভিড–১৯ টিকা পাওয়ার যোগ্য তরুণেরাও করোনার বুস্টার ডোজ পাবেন।
বাংলাদেশেও সম্প্রতি ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। টিকা পেতে উল্লেখিত বয়সী শিশুদের অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে।
শিশুদের যাদের জন্মনিবন্ধন করা নেই, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন শেষ করতে হবে এবং টিকাদান শুরু হলে যাতে আপনার শিশু বাদ না পড়ে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে অভিভাবকদের অনুরোধ করা হচ্ছে।
এ কথা বলার অবকাশ রাখে না যে কোভিড–১৯ ভাইরাস এখনো আমাদের সঙ্গে আছে এবং মাঝেমধ্যে আমরা সবাই সংক্রমিত হচ্ছি। শুধু তা–ই নয়, বড়দের পাশাপাশি এখন ছোটরাও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে।
করোনার টিকা শিশুদের কোভিডের সংক্রমণ ও কোভিডে আক্রান্ত শিশুদের দ্রুত মারাত্মক অসুস্থ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিসহ নানা রকম জটিলতা এবং কোভিড–পরবর্তী স্বাস্থ্য সমস্যা কমিয়ে দিতে সাহায্য করবে।
যেসব বাচ্চার আগে থেকেই স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন হাঁপানি, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ইত্যাদি থাকে, তাদের জন্য কোভিড টিকা নেওয়া খুবই জরুরি। কারণ, কোভিড সংক্রমণ হলে তাদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
শিশুর আগে কোভিড হলেও এ টিকা নেওয়া যেতে পারে এবং তাতে কোনো অসুবিধা নেই।
একই সময়ে অন্য টিকার শিডিউল থাকলেও কোভিড টিকা নিতে সমস্যা নেই।
অন্য টিকার মতো করোনা টিকা নেওয়ার পরও ছোটখাটো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তবে তা টিকার লাভের তুলনায় নেহাতই নগণ্য। যেকোনো টিকার মতোই এতেও টিকা দেওয়ার জায়গায় ব্যথা ছাড়াও ক্লান্তি লাগা, মাথাব্যথা, জ্বর, বমি বা বমি বমি ভাব ইত্যাদি হতে পারে। সাধারণত এগুলো এক থেকে দুই দিন থাকার পর এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসমূহ বিরল।
পরিশেষে দেশে কোভিড টিকা সহজলভ্য হলে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ৫-১২ বছর বয়সী সব শিশুকে অবশ্যই নির্ধারিত সূচি মেনে কোভিড টিকা দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে চলা উচিত।
আবিদ হোসেন মোল্লা, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল