করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের এক ব্যক্তি আজ শনিবার ঢাকায় মারা গেছেন। পাশাপাশি জ্বর-সর্দি-শ্বাসকষ্ট নিয়ে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থায় পুরো জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সার্কিট হাউস মিলনায়তনে জেলা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সন্ধ্যা ছয়টা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লকডাউন কার্যকর হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান।
সভা শেষে জেলা প্রশাসক জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জেলায় জনসাধারণের প্রবেশ এবং বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জাতীয় ও আঞ্চলিক সড়ক-মহাসড়ক এবং নৌপথে অন্য কোনো জেলা থেকে কেউ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রবেশ অথবা বের হতে পারবেন না।
ডিসি বলেন, মহাসড়কে ও নদীপথের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশিচৌকি বসানো হবে। তবে জরুরি পরিষেবা, চিকিৎসা, কৃষিপণ্য, গবাদিপশুর খাদ্য, খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ, সরবরাহ, গণমাধ্যমকর্মীরা এর আওতার বাইরে থাকবেন। জরুরি সেবা পরিচালনার জন্য ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে।
সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, আজ সকালে জ্বর-সর্দি-শ্বাসকষ্টে জেলা শহরে এক নারী এবং একই লক্ষণ নিয়ে নবীনগরে আরেক নারীর মৃত্যু হয়েছে। করোনা সন্দেহে দুজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। জেলায় সাতজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আখাউড়া উপজেলায় তিনজন, সদর উপজেলায় দুজন, নবীনগরে একজন এবং বাঞ্ছারামপুরে একজন। বাঞ্ছারামপুরের ব্যক্তি আজ ঢাকার মুগদা হাসপাতালের আইসোলেশনে মারা যান। পাঁচজন জেলা শহরের পূর্ব মেড্ডায় অবস্থিত বক্ষব্যাধি হাসপাতালের আইসোলেশনে আছেন। অপর ব্যক্তি ঢাকার কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সিভিল সার্জন আরও বলেন, জেলায় হোম কোয়ারেন্টিন থেকে ৩ হাজার ৭০১ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩১৫ জন। আর বিজয়নগরে প্রাতিষ্ঠানিক হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৬ জন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসার জন্য জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৭টি আইসোলেশন বেড, বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ২০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। আরও ৫০টি বেড প্রস্তুত করা হচ্ছে।