ফাইজার-বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত করোনার টিকা আজ সোমবার রাতে দেশে আসবে বলে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এই টিকা মূলত ঢাকা শহরের মানুষকে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে নিবন্ধন করেছেন এমন ব্যক্তিরা এই টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
ফাইজারের টিকা কবে নাগাদ দেওয়া শুরু হবে, তা এখনো ঠিক করেনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বর্তমানে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া চলছে। পাশাপাশি চারটি হাসপাতালে চীনা প্রতিষ্ঠান সিনোফার্মের টিকাও দেওয়া চলছে।
করোনার টিকা সংগ্রহ ও বিতরণের বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্স থেকে বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে ১ লাখ ৬২০ ডোজ ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা পাচ্ছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য কর্মসূচির পরিচালক শামসুল হক টেলিফোনে প্রথম আলোকে জানান, এই টিকা আজ সোমবার রাতে দেশে পৌঁছাবে।
২৭ মে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এই টিকা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ৬০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। এই তাপমাত্রার সংরক্ষণ পাত্র দেশে খুব কম আছে। ইপিআইয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান (আইপিএইচ), রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর), আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে এই টিকা রাখার মতো উপযুক্ত পাত্র আছে। আপাতত এই টিকা আইপিএইচে রাখা হবে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের গণটিকাদান শুরু হয়। এই টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদন করা। গতকাল সারা দেশে ১৯ হাজার ৪৫৯ জনকে এই টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। এই টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫৮ লাখ ২০ হাজার ১৫ জনকে। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৪১ লাখ ৬১ হাজার ৭১৪ জনকে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার মজুত শেষ হয়ে আসছে। এই টিকার প্রথম ডোজ পাওয়া প্রায় ১৫ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ পাওয়া এখনো অনিশ্চিত হয়ে আছে।
এরই মধ্যে দেশে সিনোফার্মার টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। চীন সরকার বাংলাদেশকে ৫ লাখ টিকা উপহার হিসেবে দিয়েছে। আরও ৬ লাখ উপহার দেবে। এ ছাড়া সরকার চীন থেকে দেড় কোটি টিকা কেনার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করেছে।
সিনোফার্মার টিকাটির বাণিজ্যিক নাম ‘ঝং আল কে উই’। ২৮ এপ্রিল টিকাটির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের সুপারিশে বলা হয়েছিল, এক হাজার মানুষকে টিকা প্রয়োগ করে সাত দিন নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। পর্যবেক্ষণে সন্তোষজনক ফল পাওয়া গেলে এই টিকা গণহারে দেওয়া যাবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য বলছে, ঢাকার চারটি হাসপাতালে চীনের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ২৫ মে দেশে চীনা টিকা দেওয়া শুরু হয়। গতকাল পর্যন্ত ২ হাজার ১৪২ জনকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে।