করোনাভাইরাসের ফলে লকডাউনে থাকা আমেরিকার মানুষ আস্তে আস্তে বের হওয়া শুরু করেছে। বের হচ্ছেন বাংলাদেশি আমেরিকানরাও। নিজেরা কর্মহীন থাকলেও দেশের আত্মীয়স্বজন ও অসহায় মানুষের কথা ঠিকই ভাবছেন। তাই পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে স্বজন, অসহায় মানুষের সহযোগিতা, জাকাত ও ফিতরা আদায়ে দেশে অর্থ পাঠাচ্ছেন। নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের বাংলাদেশি আমেরিকানরা গত পনেরো দিনে দেশে প্রায় দেড় কোটি ডলার পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে। এই দুর্দিনে দেশের মানুষেরা কষ্টে আছেন ভেবে প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশিই পাঠাচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
একাধিক মানি এক্সচেঞ্জ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু গত কয়েক দিনে গ্রাহকদের ডলার পাঠানো দেখে আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। অতীতের তুলনায় এবার অল্প সময়ে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। প্রবাসীরা দেশের মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে প্রয়োজনের তুলনায় স্বজনদের জন্য এবং গরিবদের জন্য ফিতরা–জাকাতের টাকা বেশিই পাঠাচ্ছেন।
করোনার কারণে দীর্ঘদিন মানি এক্সচেঞ্জ কোম্পানিগুলোর অফিস বন্ধ ছিল। ২ মে থেকে প্রথম সোনালী এক্সচেঞ্জ কোম্পানির সাতটি শাখার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে সানমান গ্লোবাল, জনতা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, প্রভু মানি ট্রান্সফার, স্টান্ডার্ড ব্যাংক, রিয়া মানি ট্রান্সফার, চয়েস মানি ট্রান্সফার, বিএ এক্সপ্রেসসহ অন্যান্য মানি ট্রান্সফার কোম্পানিগুলো কার্যক্রম শুরু করে।
মানি এক্সচেঞ্জ কর্মকর্তারা জানান, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে অফিসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিগত দুই সপ্তাহে প্রায় দেড় কোটি ডলার রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়) পাঠিয়েছে বাংলাদেশি আমেরিকানরা।
ব্রুকলিনের ব্যবসায়ী কাজী আযম বলেন, ‘আমরা এবার প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশি টাকা পাঠিয়েছি । কারণ দেশের মানুষ কষ্টে আছে।’
জ্যাকসন হাইটসের আরেক ব্যবসায়ী আবদুল ওয়াহিদ বলেন, আমি জাকাতের জন্য দেশে ২০ হাজার ডলার পাঠিয়েছি। দেশে থেকে স্বজনরা ফোন করেছেন আরও টাকা পাঠানোর জন্য। কারণ দেশে লোকজনের কাজকর্ম নেই। অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছে। তাদের এই মুহূর্তে সহযোগিতা প্রয়োজন। তাই আরও কিছু ডলার পাঠাব দেশে।’
সানমান গ্লোবাল এক্সপ্রেসের ভিপি অ্যান্ড সিসিও মাসুদ রানা বলেন, করোনায় অফিস বন্ধ থাকলেও বর্তমানে অনেক প্রবাসী ডলার পাঠাতে আমাদের কাছে আসছেন। অতীতের তুলনায় স্বল্প সময়ে বেশি ডলার পাঠানো দেখে আমরা আশাবাদী, ঈদের আগে অনেক বেশি ডলার প্রবাসীরা দেশে পাঠাবেন।