ঢাকাসহ সারা দেশে রোববার করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। সারা দেশে মোট ১ হাজার ৫টি হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে। এগুলোর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫০টি হাসপাতাল, মাতৃসদন ও ক্লিনিকে সকাল আটটা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে।
কোভিড–১৯–এর টিকা দেওয়া হবে যেসব হাসপাতালে, সেগুলোর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৬টি, দক্ষিণ সিটিতে ১৯টিসহ মোট ৪৫টি হাসপাতালের নামের তালিকা দুই সিটির স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। তবে ঢাকার আরও পাঁচটি হাসপাতালে কোভিড-১৯-এর টিকা দেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
প্রথম পর্যায়ে ৩৫ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত ৩ লাখ ২৮ হাজার ব্যক্তি টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তবে সুরক্ষা অ্যাপ এখনো চালু হয়নি বলে শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি ‘এ’ মানের। ১০০-এর মধ্যে ৭৫ নম্বর পেলে এ মানের হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের টিকাদান কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সংসদ সচিবালয় ক্লিনিক, মিরপুরের ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতাল, মহাখালীতে সংক্রামক রোগ হাসপাতাল, উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, জাতীয় বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ প্রতিরোধ কেন্দ্র, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় নাক কান ও গলা ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল), শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শ্যামলীর ২৫০ শয্যার টিবি হাসপাতাল।
এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটির পাঁচটি নগর মাতৃসদন কেন্দ্র মগবাজারের নয়াটোলা, মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি, মিরপুর মাজার রোডের নেকি বাড়ির টেক, মিরপুরের বর্ধিত পল্লবী এলাকা ও উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের মাতৃসদনে করোনার টিকা দেওয়া হবে।
ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ শাখা থেকে জানানো হয়, রোববার সকাল ১০টায় মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সেন্টারে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা এর উদ্বোধন করবেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) টিকাদান কেন্দ্রগুলো হলো শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ক্লিনিক, ফুলবাড়িয়ায় সরকারি কর্মজীবী হাসপাতাল, আজিমপুর মা ও শিশু হাসপাতাল, মাতুয়াইল শিশু মাতৃসদন হাসপাতাল, রাজারবাগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, কামরাঙ্গীরচরে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পুরান ঢাকায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, পিলখানার বিজিবি হাসপাতাল, নয়াবাজারে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, লালবাগে ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতাল।
এ ছাড়া দক্ষিণ সিটির পাঁচটি নগর মাতৃসদন কেন্দ্র ধলপুরে নগর মাতৃসদন, বংশালের কসাইটুলী নগর মাতৃসদন, হাজারীবাগে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন নগর মাতৃসদন, উত্তর মুগদা মাতৃসদন ও খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়া মাতৃসদন কেন্দ্রে কোভিড–১৯–এর টিকা দেওয়া হবে।
দক্ষিণ সিটির মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও মাতৃসদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। করোনার টিকা প্রয়োগে ইতিমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসক, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবককে চার পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সকাল ১০টায় পুরান ঢাকার নয়াবাজার এলাকায় অবস্থিত ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। দক্ষিণ সিটির মেয়র ফজলে নূর তাপস এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন।