মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সুরেই সুর মেলালেন তাঁর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তাঁর মতো তিনিও বললেন, চীনের গবেষণাগার থেকে নতুন করোনাভাইরাসটির উৎপত্তি ঘটেছে বলে ব্যাপক প্রমাণ রয়েছে।
এর আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলতে পারেন, বিশ্বব্যাপী মহামারি সৃষ্টিকারী ভাইরাসটি চীনের পরীক্ষাগার (ল্যাব) থেকে এসেছে। আজ সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জাননো হয়, করোনাভাইরাসের ব্যবস্থাপনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই দোষারোপ বেইজিংয়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের উত্তাপ ছড়াচ্ছে।
পম্পেওর এই মন্তব্য এমন সময়ে করলেন, যখন ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশ সতর্কতার সঙ্গে ভাইরাসের লকডাউন তুলতে প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং বিভিন্ন দেশের সরকার অর্থনীতি পুনরায় চালু করার চেষ্টা করছে।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ মারা গেছে। ৩৪ লাখ মানুষ এতে সংক্রমিত। বিশ্বের অর্ধেকের মতো মানুষ এতে লকডাউনে চলে গেছে এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি মহামন্দার পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ডিসেম্বরে উহান শহরে প্রথম প্রাদুর্ভাব ঘটা ভাইরাসটি সম্পর্কে ক্রমাগত চীনের সমালোচনা করে আসছেন।
ট্রাম্প সম্প্রতি অভিযোগ করেন, তার পুনর্নির্বাচিত কর্মসূচি ভন্ডুল করতেই চীন আগেভাগে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেনি।
বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, ভাইরাসটি প্রাণী থেকে মানুষে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এটি উহানের একটি বাজার থেকে ছড়ায়, যেখানে বিভিন্ন বন্য প্রাণীর মাংস বিক্রি করা হয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীন। মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা অফিসের পরিচালক বলেছেন, বিশ্লেষকেরা এখনো এই প্রকোপের প্রকৃত উৎস নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছেন।
সিআইএর সাবেক প্রধান পম্পেও এবিসিকে বলেন, কোভিড -১৯ ভাইরাস যে মানবসৃষ্ট নয়, এতে তিনি একমত। তবে তিনি ট্রাম্পের চেয়ে একধাপ এগিয়ে মন্তব্য করেছেন, উহান ল্যাব থেকে যে এটি ছড়িয়েছে, এর যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তবে এ প্রমাণ তিনি হাজির করতে পারেননি।
পম্পেও বলেন, ‘আমি মনে করি, পুরো বিশ্ব বিষয়টা এখন দেখতে পাবে। মনে রাখবেন, বিশ্বকে সংক্রমিত করার এবং নিম্নমানের পরীক্ষাগার চালানোর ইতিহাস চীনের রয়েছে। শুরুতে এ ভাইরাসকে খাটো করে দেখার প্রয়াসটি ছিল কমিউনিস্টদের গুজব বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা, যা প্রচুর ঝুঁকি তৈরি করেছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অত্যন্ত চতুর। আমরা এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দায়বদ্ধ করে রাখব।’
একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প মার্কিন গোয়েন্দাদের ভাইরাসটির উৎপত্তি সম্পর্কে আরও সুনিশ্চিত হওয়ার নির্দেশ দেন।
গত সোমবার ট্রাম্প সতর্ক করেন, ‘চীনকে দায়ী করার অনেক পথ রয়েছে। আমরা তাদের ওপর খুশি নই। আমরা পুরো পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নই। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, এটি উৎস থেকে বন্ধ করা যেত।’