হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে অনেকেই ফিরে এলেও নিউইয়র্কে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। স্থানীয় সময় বুধবার (১ এপ্রিল) মধ্যরাত পর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবায় নিউইয়র্কে আরও কিছু স্বদেশির প্রাণ ঝরেছে। করোনাভাইরাস প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের। গতকাল বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় আমেরিকায় ১৮ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে এ ঘাতক ভাইরাসে।
ভাইরাসের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন আওয়াজবিডি সম্পাদক এবং প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার বিশেষ প্রতিনিধি শাহ আহমদের দাদি সাহারা বেগম, মোস্তাক আহমদ, জিল্লুর রহমান, মো. ওয়াজিল্লাহ, মালেকুজ্জামান মানিক, আবদুল মালেক, আফজাল আহমদ, মো. মহসিন, রাশেদা আক্তার বিউটি, শিপন মিয়া, আউয়ুব খান, সৈয়দা খাতুন, বদরুল হক আতিক, মহিকুজ্জামান, রহমান স্বপন, আবদুর রউফ, রফিক উদ্দিন ও ফারুক আহমদের মা।
গত ৩১ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন নিউইয়র্ক ও একজন নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যে মারা যান। এ নিয়ে ১ এপ্রিল পর্যন্ত আমেরিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৫৩ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হলো।
এদিকে আমেরিকায় এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজার ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ১৫ হাজার ২০ জন। নিউইয়র্ক রাজ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনায় নিউইয়র্কে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৮৩ হাজার ৯০১ জন। এতে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ২১৯ জনের।
করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া লোকজনকে আত্মীয়স্বজনরা নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় সমাহিত করছেন। সাংবাদিক স্বপন হাইয়ের দাফন সম্পন্ন হয়েছে নিউজার্সির কবরস্থানে। নিউইয়র্কে মারা যাওয়া বেশ কয়েকজনের আন্তিম ঠিকানা হয়েছে নগরীর ওয়াশিংটন মেমোরিয়াল গোরস্থানে। বাংলা সংবাদমাধ্যমের ইলিয়াস খসরুর অবস্থা উন্নতির দিকে বলে তাঁর পরিবার থেকে জানানো হয়েছে। সাবেক ছাত্রনেতা শাহাব উদ্দিনের অবস্থা অপরিবর্তিত।
বাংলাদেশিদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যা যেমনি বেড়েছে, তেমনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা বা বাড়িতেই সুস্থ হচ্ছেন—এমন খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে চলেছে সুদীর্ঘ এক মৃত্যুমিছিল। মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় অর্ধলক্ষ ছুঁতে চলেছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৯ লাখ পেরিয়েছে। দেশের পর দেশ লকডাউন। বাড়ি থেকে বেরোনো বারণ, বারণ মানুষের সঙ্গে মানুষের সময় কাটানো। কত মানুষ এই সামাজিক দূরত্বে বিরহ-ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন, কত মানুষ আরও দূরে সরে যাচ্ছেন প্রিয়জনের থেকেও। গোটা বিশ্ব যেন এক বিষণ্নতায় ডুবে যাচ্ছে ক্রমে।
নিউইয়র্ক নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত প্রায় প্রতিটি পরিবারের কোনো স্বজন বা পরিচিত মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রচারে অনেকেই অজানা আতঙ্কে ভুগছেন। অনেকেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঘরে ফিরছেন বা ঘরে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।