ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ

ভিকারুননিসা নূন স্কুল

১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের শুনানি ১১ জুলাই

বয়সসীমা লঙ্ঘিত হওয়ায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা লিভ টু আপিল আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ১১ জুলাই শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম আজ রোববার এ আদেশ দেন। ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর অভিভাবকেরা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দুটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেছেন।

আদেশের বিষয়টি জানিয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, লিভ টু আপিল শুনানির জন্য ১১ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে। এ অবস্থায় স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেবে না। শুনানির পর আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে বয়সসীমা লঙ্ঘিত হওয়ায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে গত ২১ মে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ১৬৯ শিক্ষার্থীর শূন্য আসনে ভর্তির নীতিমালা অনুসারে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি নিতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ভর্তির প্রক্রিয়া নিয়ে ভর্তি–ইচ্ছুক দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবকের করা এবং ভর্তি বাতিলের বৈধতা নিয়ে ১২০ শিক্ষার্থীর অভিভাবকের করা পৃথক দুটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে এ রায় দেওয়া হয়। দুই অভিভাবকের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করা হয়। ১২০ অভিভাবকের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া রুল খারিজ (ডিসচার্জ) করা হয়।

হাইকোর্টের ওই রায়ের পরপরই তা স্থগিত চেয়ে ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা পৃথক দুটি আবেদন করেন, যা ২৬ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। সেদিন আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়ে আবেদনকারীপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল করতে বলেন। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা পৃথক লিভ টু আপিল করেন, যা আজ চেম্বার আদালতে ওঠে।

আদালতে লিভ টু আপিলকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও মুস্তাফিজুর রহমান খান। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম। দুই অভিভাবকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম সরদার।

নির্দিষ্ট বয়সসীমার বাইরে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে লটারিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে অভিযোগ তুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি-ইচ্ছুক দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক প্রথমে একটি রিট করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় প্রথম শ্রেণিতে বিধিবহির্ভূতভাবে ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি এক স্মারকে মাউশি নির্দেশনা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণির ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিল করার বিষয়টি জানিয়ে মাউশিতে গত ৪ মার্চ চিঠি পাঠায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।

১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত ও ভর্তি বাতিলের বৈধতা নিয়ে ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা আরেকটি রিট করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৫ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। পৃথক রুলের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে ২১ মে হাইকোর্ট রায় দেন।