টেকসই উন্নয়ন তালিকায় যুক্ত হলো ১০ বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান

বাংলাদেশের করপোরেট জগতে টেকসই উন্নয়নের বিষয়টি সম্প্রতি প্রকাশিত ব্লুমবার্গের হালনাগাদ তথ্যে উঠে আসে। ব্লুমবার্গের এনভায়রনমেন্ট, সোশ্যাল অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (ইএসজি) তালিকায় নতুনভাবে জায়গা করে নিয়েছে তিনটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে এ তালিকায় থাকা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০-এ। এটি গত বছরের তুলনায় একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি, যেখানে সাতটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

মর্যাদাপূর্ণ এ তালিকায় স্থান পাওয়া ১০টি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের ছয়টিই দেশীয়ভাবে বিকশিত প্রতিষ্ঠান। তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নতুন তিনটি প্রতিষ্ঠান হলো বিএসআরএম লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ ও এমজেএল বাংলাদেশ। এ সাফল্য ইএসজি কমপ্লায়েন্স গ্রহণ ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি দেশের অব্যাহত চাহিদার বিষয়টি তুলে ধরে। ২০২৩ সালের টেকসই উন্নয়ন প্রকাশ অনুযায়ী, এ তালিকার মনোনীত অন্য সাতটি প্রতিষ্ঠান হলো বিএটি বাংলাদেশ (বিএটিবি), গ্রামীণফোন, ম্যারিকো বাংলাদেশ, ব্র্যাক ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ।

এ অর্জন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনও তুলে ধরে, যেমন বিএসআরএম পানি পুনর্ব্যবহার ও বায়ুদূষণ রোধে উদ্ভাবনী পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। আবার লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ তাদের চারটি টেকসই উন্নয়ন স্তম্ভ—জলবায়ু, পুনর্ব্যবহারযোগ্যতা, প্রকৃতি ও মানুষের মাধ্যমে নেট-জিরো কার্বন নিঃসরণ অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে। বিএটি বাংলাদেশ দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যারা সব উৎপাদন এলাকায় পানির টেকসই ব্যবস্থাপনার জন্য অ্যালায়েন্স ফর ওয়াটার স্টুয়ার্ড শিপের মূল সনদ অর্জন করেছে।

ব্লুমবার্গ এই তালিকার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর টেকসই উদ্যোগ–সংক্রান্ত প্রকাশনাগুলো থেকে স্বেচ্ছায় তথ্য সংগ্রহ করে। এই মূল্যায়নে গুণগত তথ্যের তুলনায় পরিমাণগত তথ্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এ সাফল্য থেকে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে অগ্রগতি ও ইএসজির পটভূমিতে বৈশ্বিক স্বীকৃতি অর্জনের বিষয়টি উঠে আসে। গত বছর এ তালিকায় স্থান করে নেওয়া বিএটি বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে সরাসরি কার্যক্রমে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি ইএসজি প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত হয়।

শীর্ষস্থানীয় ইএসজি রেটিং প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ব্লুমবার্গ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানের টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন মূল্যায়ন করে থাকে। পরিবেশগত, সামাজিক ও শাসনের (ইএসজি) নানা বিভাগের ভিন্ন ভিন্ন মানদণ্ডের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল্যায়ন করা হয়। বিশদ পর্যালোচনার পর ১০০টির বেশি দেশের প্রায় ১৬ হাজার প্রতিষ্ঠানকে এই টেকসই উন্নয়ন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ব্লুমবার্গ অনুযায়ী, ইএসজি রেটিংপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বৈশ্বিক ইকুইটি বাজার মূলধনের ৯৪ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। বিশ্বের তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বৈশ্বিক ৬০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী বলে মনে করা দায়িত্বশীল বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বিজ্ঞপ্তি