এ কে এম সালাহ উদ্দিন
এ কে এম সালাহ উদ্দিন

লক্ষ্মীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুসহ ৭১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় দায়িত্বরত পুলিশের কাজে বাধা, পুলিশ বক্স ভাঙচুর ও মারধর করে আট পুলিশ সদস্যকে আহত করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন ওরফে টিপুকে প্রধান আসামি করে এ মামলা করা হয়। সালাহ উদ্দিন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আলোচিত সাবেক মেয়র প্রয়াত আবু তাহেরের ছেলে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সদর থানায় মামলাটি করা হয় বলে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার জানিয়েছেন। মামলায় সালাহ উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৭০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষের সময় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতে দেখা গেছে এক যুবককে

কোটা আন্দোলনকে ঘিরে ৪ আগস্ট সংঘর্ষে পুরো লক্ষ্মীপুর শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। টানা ৬ ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থী ওপর গুলি বর্ষণ করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিনসহ তাঁর বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন ৪ শিক্ষার্থীসহ ১২ জন। আহত হয়েছেন অনন্ত শতাধিক। এর মধ্যে অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ।

পুলিশ জানান, ৪ আগস্ট মাদাম ব্রিজ ও ঝুমুর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয় ছাত্র-জনতা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ লক্ষ্মীপুর আদালতের সামনে দায়িত্বরত ছিল। মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তিরা মিছিল নিয়ে পুলিশের কাজে বাধা সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে হামলা চালিয়ে আট পুলিশ সদস্যকে আহত করেন। ঘটনার সময় তাঁদের হামলায় ছাত্র-জনতাও আহত হয়। শহরের বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা দফায় দফায় হামলা চালান।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর সালাহ উদ্দিনসহ আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। তাঁদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চলছে।

লক্ষ্মীপুর শহরে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে ৪ আগস্ট আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২। তাঁদের মধ্যে ৬ জন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী। শিক্ষার্থীরা রয়েছে ৪ জন। অন্য দুজনের নাম পরিচয় জানা যায়নি।

নিহত চার শিক্ষার্থী হলেন লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরিয়া কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী সাদ আল আফনান (১৯), লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কাউসার ওয়াহেদ বিজয় (২৩), শিক্ষার্থী ওসমান গনি (২৩), দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী মো. সাব্বির।

এ ছাড়া সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হারুনুর রশিদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের গাড়িচালক যুবলীগের কর্মী মো. রাসেল, যুবলীগ কর্মী মো. শাহজাহান, মো. রিয়াজ, পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আকিবুল হাসান সিফাত ও ছাত্রলীগ কর্মী তাওহীদ কবির নিহত হয়েছেন।