রাজধানীর শাজাহানপুরে মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল শনিবার গভীর রাতে সাভারের আশুলিয়া এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব বলছে, কম দামে মাংস বিক্রি করায় মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা খলিলুর রহমান ও ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রেতাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। গত ১৮ জানুয়ারি খলিলকে ফোন করে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। এ ছাড়া কম দামে মাংস বিক্রি করলে তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে দুই দিনের মধ্যে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, ঢাকার আশুলিয়ার মো. নুরুল হক (৬৭) ও পাবনা সদর থানার মোহাম্মদ ইমন (২২)।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
২০ জানুয়ারি খলিলুর রহমান শাজাহানপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর গতকাল শনিবার রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-৩ ও র্যাব-৪-এর একটি দল ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাংস ব্যবসায়ী খলিল তাঁর ‘খলিল গোস্ত বিতান’ নামে মাংসের দোকান গত ১৯ নভেম্বর ৫৯৫ টাকায় প্রতি কেজি মাংস বিক্রি শুরু করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সেটা ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলে। এরপর আরও কিছু মাংস ব্যবসায়ী প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকায় বিক্রি শুরু করেন। গত ২২ ডিসেম্বর ভোক্তা অধিদপ্তর মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশন বৈঠক করে ৬৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীরা কিছুদিন আগে রাজশাহীর বাঘার আড়ানি হাটে ন্যায্যমূল্যে গরুর মাংস বিক্রি করায় এক মাংস ব্যবসায়ীকে খুন করেন বলেও র্যাব জানায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার দুজন দায় স্বীকার করেছেন, বলছে র্যাব। গ্রেপ্তার নুরুল হক দীর্ঘদিন ধরে আশুলিয়া থানার পাথালিয়া ইউনিয়নের চারিগ্রাম এলাকায় ডিশ ও ইন্টারনেটের ব্যবসা করতেন।
পরিচিত এক ব্যক্তি তাঁকে খলিলকে ফোনে হত্যার হুমকি দিতে বলেন। বিনিময়ে তিনি ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায় ঠিক করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। নুরুলের কথামতো খলিলকে ফোনে হুমকি দেন ইমন।
গ্রেপ্তার নুরুলের নামে ঢাকার আশুলিয়া থানায় হত্যার হুমকি, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটির বেশি মামলা রয়েছে বলে জানায় র্যাব। ইমন দীর্ঘদিন ধরে নুরুলের ডিশের ব্যবসার কাজে সহায়তা করতেন। র্যাব জানায়, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।