অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের জামিন বহাল রয়েছে। তাঁর জামিন মঞ্জুর করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টকে দুই মাসের মধ্যে জি কে শামীমের করা আপিল (সাজার রায়ের বিরুদ্ধে) নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
ওই মামলায় ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালত রায় দেন। রায়ে জি কে শামীম ও তাঁর সাত দেহরক্ষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জি কে শামীম আপিল করে জামিনের আবেদন করেন। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর হাইকোর্ট জি কে শামীমকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন। এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা গত ১৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষকে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি হয়।
আদালতে জি কে শামীমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল, এস এম শাহজাহান, বি এম ইলিয়াস কচি ও কুমার দেবুল দে। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
পরে আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই মামলায় জি কে শামীমকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জি কে শামীমের করা আপিল দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টকে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চকে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। জি কে শামীমের বিরুদ্ধে থাকা পাঁচটি মামলার মধ্যে তিনটিতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। অন্য দুটি মামলা থাকায় এখনই তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না।’
২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিজ কার্যালয়ে সাত দেহরক্ষীসহ শামীম গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক, অর্থ পাচার ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক মামলা হয়। গ্রেপ্তারের আগে শামীম কখনো নিজেকে যুবলীগের সমবায়বিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দিতেন। আবার কখনো পরিচয় দিতেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের বড় কাজের প্রায় সবই ছিল তাঁর প্রতিষ্ঠানের কবজায়।