রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ছাদে চেপে ঢাকা ছাড়ছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষজন। বেশ কিছু ট্রেন দেরিতেও ছেড়ে গেছে। ঈদযাত্রার সপ্তম দিনে আজ মঙ্গলবার সকালে এমন চিত্র দেখা যায়।
কমলাপুর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলগামী একতা এক্সপ্রেস ও রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীরা ছাদে চেপে গেছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, সকাল ১০টার পরপরই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এসে থামে একতা এক্সপ্রেস ট্রেন। সেখানে আগে থেকেই বহু মানুষ অপেক্ষা করছিলেন। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা যাত্রীরা নামার আগেই অপেক্ষমাণ যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে উঠতে শুরু করেন। নামতে না পেরে চাপে পড়ে নারী-শিশুদের চিৎকার ও কান্নাকাটি করতেও দেখা যায়।
তারপরও বহু যাত্রী ট্রেনের দরজা দিয়ে ওঠার সুযোগ পাননি। অনেকেই ট্রেনের জানালা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। একপর্যায়ে ট্রেনের ভেতরে দাঁড়ানোর মতো অবস্থাও ছিল না। অনেকে ভেতরে জায়গা না পেয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠেন। পুরুষের পাশাপাশি নারী, শিশুদেরও ছাদে চেপে যাত্রা করতে দেখা যায়।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর যাওয়ার জন্য ট্রেনের ছাদে ওঠেন দুই বোন নাসরিন আক্তার ও নাসিমা আক্তার। ঢাকায় পড়াশোনা করা এই দুজন জানান, স্ট্যান্ডিং (দাঁড়িয়ে যাওয়ার) টিকিট কেটেছি। ভেতরে জায়গা নেই। উঠতেও পারেননি। তাই বাধ্য হয়ে ছাদে উঠেছেন। ঠাকুরগাঁও যাওয়ার উদ্দেশে ছাদে ওঠা মো. হোসেন নামের এক ব্যক্তিও একই ধরনের কথা বলেন।
দেখা যায়, রোদ থেকে বাঁচতে ছাদের যাত্রীদের কেউ ছাতা, কেউ গামছা, কেউ ওড়না, কেউ শাড়ির আঁচল, কেউ লুঙ্গি দিয়ে মাথা ঢেকেছেন।
অনেক চেষ্টা করেও ছাদে ওঠা থেকে ঠেকানো যায়নি দাবি করেছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার। ছাদে ওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কীভাবে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে, আপনারা দেখেছেন। কিন্তু বাস্তবতার কাছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হার মেনেছে, বা আমাদের সমস্ত আইন হার মেনেছে।’ উত্তরাঞ্চলের মানুষদের ছাদে চেপে ঈদে বাড়ি ফেরা কীভাবে রোধ করা যায়, তা নিয়ে রেলওয়েকে ভাবতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ট্রেন ছেড়েও যাচ্ছে দেরিতে। পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তা ছেড়ে যায় সকাল ১০টা ৪৮ মিনিটে। রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনও আধা ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে।