যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আজও পুলিশের সংঘর্ষ

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আজ শুক্রবারও পুলিশের সংঘর্ষ চলছে।

যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় অবস্থানকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়েছে। অন্যদিকে শনির আখড়ার কাজলা অংশে অবস্থানরত আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ছেন।

আজ সকাল সাতটার পর থেকেই কাজলা–শনির আখড়া অংশে বিপুলসংখ্যক আন্দোলনকারীকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। বিপরীতে যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় পুলিশ, আমর্ড পুলিশ, র‍্যাব অবস্থান নেয়।

টানা তৃতীয় দিন সংঘর্ষ চলমান থাকায় এলাকায় লোকজনের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করেছে।

স্থানীয় একটি হাসপাতালের কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত তিনি অনেক গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ শোনেন। রাত ১২টার পর গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ কমে আসে। তবে আজ সকাল নয়টার পর থেমে থেমে গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দ আসতে থাকে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারা দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। রাজধানী ছাড়াও দেশের ৪৭টি জেলায় গতকাল দিনভর বিক্ষোভ, অবরোধ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, পুলিশের হামলা-গুলি ও সংঘাতের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ২৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অন্তত দেড় হাজার।

দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পর গত বুধবার রাতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষার্থীরা। ‘শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব ও সোয়াটের ন্যক্কারজনক হামলা, খুনের প্রতিবাদ, খুনিদের বিচার, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা এবং কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে’ বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচি ঘোষণা করেন তাঁরা। এর সমর্থনে গতকাল দলে দলে রাস্তায় নেমে আসেন শিক্ষার্থীরা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে এবার আন্দোলন শুরু হয় গত ৫ জুন। বিরতি দিয়ে জুন মাসে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর টানা আন্দোলন শুরু হয় ১ জুলাই। এটি চলে মূলত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। গত সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার পর মঙ্গলবার সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন। এদিন হামলা-সংঘর্ষে সারা দেশে নিহত হন ছয়জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি মোতায়েন করা হয়। তবে বুধবার সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীরা মেনে নেননি। এর আগে মঙ্গলবার সব স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। বন্ধ করা হয় সিটি করপোরেশন এলাকার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ও।