শেখ রাসেল জাতীয় শিশু–কিশোর পরিষদের জন্য ২০১২ সালে এক একর জায়গা বরাদ্দ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় পর আজ সোমবার দুপুরে ওই জায়গার দখল পরিষদের প্রতিনিধিদের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বরাদ্দ করা ওই জায়গাটি রাজ মুশুরী মৌজায়। যেটি সরকারের এক নম্বর খাস খতিয়ানের জমি। রাজধানীর হাজারীবাগ থানাধীন গাবতলী-সদরঘাট বেড়িবাঁধ সড়কের ঢালে (সিকদার মেডিকেল সংলগ্ন) এর অবস্থান।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বেড়িবাঁধসংলগ্ন বাঁশের খুঁটিতে লাল পতাকা বেঁধে, রশি টানিয়ে ওই জমির সীমানা চিহ্নিত করে দিয়েছেন। এর আগে ওই জায়গায় থাকা বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ ছাড়া বরাদ্দ করা জমির আংশিক জায়গা দখল করে একটি বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বিপণিবিতানের প্রয়োজনে ব্যবহার করা হচ্ছিল। গাড়ির যন্ত্রাংশ মেরামতের গ্যারেজের জন্যও জায়গা দখল ছিল।
বেলা একটার দিকে ওই জায়গায় যান ঢাকা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। কর্মকর্তাদের নিয়ে তিনি জায়গাটি ঘুরে দেখার পরে জমিটি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু–কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহিদ উল্ল্যার কাছে হস্তান্তর করেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, রাজ মুশুরী মৌজায় সরকারের বেশ কিছু খাসজমি আছে। এ রকম একটি খাসজমি এটি, যা এক নম্বর খাস খতিয়ানের এক একর জমি। ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই জমি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু–কিশোর পরিষদের জন্য বিনা মূল্যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিয়েছেন। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এই জায়গা তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এত দিন কেন বুঝিয়ে দেওয়া যায়নি, জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এত দিন হয়নি, সেটা অতীত। এখন বুঝিয়ে দিচ্ছি, এটা নিয়ে প্রশংসা (অ্যাপ্রিশিয়েট) করুন।’ ওই এলাকায় থাকা এমন খাসজমির সন্ধান দিলে পর্যায়ক্রমে উদ্ধার করা হবে বলেও জানান তিনি।
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু–কিশোর পরিষদের মহাসচিব কে এম শহিদ উল্ল্যা প্রথম আলোকে বলেন, বেশির ভাগ জায়গায় এখানে মাঠ করা হবে। যাতে শিশু-কিশোরেরা খেলাধুলা করার জায়গা পায়। তবে কার্যালয় পরিচালনায় যেহেতু অবকাঠামো প্রয়োজন, তাই ছোট করে একটি ঘরও তৈরি করা হবে। পাশাপাশি ইনডোর খেলাধুলার জন্যও কিছু অবকাঠামো তৈরি করা হবে।
জমির দখল হস্তান্তরের সময় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মমতাজ বেগম, লালবাগ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ মামুনুর রশীদসহ পরিষদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে চিহ্নিত সীমানায় সিমেন্টের খুঁটি ও দেয়াল স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়।