নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের বাসিন্দা জেসিন আহমেদ। গ্রামের বাড়িতে যেতে সকাল সোয়া ছয়টায় রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে মহুয়া কমিউটার ট্রেনের টিকিট কাটেন তিনি। ট্রেন ছাড়ার সময় ছিল সকাল ৮টা ১৫ মিনিট।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেসিনের সঙ্গে রেলস্টেশনের ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কথা হয়। তখনো মহুয়া কমিউটার ট্রেন কোনো প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ায়নি। পড়ে ১০টা ৪২ মিনিটে ট্রেনটি ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ায়। তবে প্রতিবেদন লেখার সময় ১১টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে ছাড়েনি।
জেসিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার ঘণ্টার বেশি হয়ে গেল। এখনো ট্রেনই আসেনি। আসলেও কখন যে ছাড়বে, ঠিক নাই। অপেক্ষা করতে করতে খারাপ লাগছে।’ জেসিন ঢাকার ওয়ারীতে খালার বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। আজ বুধবার বাড়ি ফিরছেন। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তিনি।
সকাল সাড়ে ১০টায় দেখা যায়, একতা এক্সপ্রেস ট্রেন ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে। ট্রেনটি ১০টা ১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল তিতাস কমিউটারের। এটি দাঁড়িয়ে ছিল ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ৯টা ২৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে এক ঘণ্টা পরে। কর্ণফুলী কমিউটার ছাড়ার কথা ছিল পৌনে ৯টায়। বেলা সোয়া ১১টায় ট্রেনটি ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে ছিল।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনে যাত্রার প্রথম দিন সকাল ১০টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে গিয়ে যাত্রীদের ভিড় ও সেই সঙ্গে অনেককে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। স্টেশন ভবনের ভেতরে ও প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের কেউ বসে, কেউ দাঁড়িয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। নির্ধারিত বসার স্থানে জায়গা না পেয়ে অনেকে সঙ্গে আনা ব্যাগ, পণ্যবোঝাই বস্তা কিংবা প্লাস্টিক–জাতীয় পণ্যের ওপর বসে ছিলেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় দেখা যায়, একতা এক্সপ্রেস ট্রেন ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে। ট্রেনটি ১০টা ১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিল তিতাস কমিউটারের। এটি দাঁড়িয়ে ছিল ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ৯টা ২৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে এক ঘণ্টা পরে। কর্ণফুলী কমিউটার ছাড়ার কথা ছিল পৌনে ৯টায়। বেলা সোয়া ১১টায় ট্রেনটি ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে ছিল।
স্ত্রী, সন্তান ও ভাবিকে সঙ্গে করে স্টেশনে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন জামাল উদ্দিন। তাঁদের সঙ্গে কথা হয় বেলা পৌনে ১১টায়। জামাল উদ্দিন বলেন, ‘সাড়ে ৯টায় স্টেশনে এসেছি। ভেতরে ঢুকতে কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু এসে দেখলাম ট্রেনটি এখনো কমলাপুরে আসেনি। কখন ছাড়বে কিছু জানতে পারছি না।’ সর্বশেষ ১১টা ২৪ মিনিটে ট্রেনটি ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল।
কিছু জায়গায় রেললাইনের সংস্কারকাজ চলমান থাকায় ঢাকা পৌঁছাতে ট্রেনের দেরি হচ্ছে। তবে কমলাপুর থেকে দ্রুত ট্রেনের ইঞ্জিন পরীক্ষা, ট্রেন পরিষ্কার, পানি ভরে যত দ্রুত সম্ভব ট্রেন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।মোহাম্মদ মাসুদ সারোয়ার, কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার
ট্রেনের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রী ও স্টেশনের একাধিক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল থেকেই ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হচ্ছে। কোনো কোনো আন্তনগর ট্রেন দুই ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে ছেড়েছে। পারাবত দেরি করেছে দুই ঘণ্টা। ছাড়ার কথা ছিল ৬টা ২০ মিনিটে, ছেড়েছে ৮টা ২০ মিনিটে। এগারোসিন্ধুর ছাড়ার কথা ছিল ৭টা ১৫ মিনিটে। ছেড়েছে ৯টা ৩০ মিনিটে। এ ছাড়া বেশির ভাগ লোকাল বা মেইল ট্রেন কয়েক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানানো হয়েছে, আজ কমলাপুর স্টেশন থেকে ৬৬ জোড়া ট্রেন ছাড়বে। আর ঈদ স্পেশাল ট্রেন ছাড়বে একটি। ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন ট্রেনের সঙ্গে ২৫টির মতো বাড়তি বগি যুক্ত করা হয়েছে।
কমলাপুর স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, কিছু জায়গায় রেললাইনের সংস্কারকাজ চলমান থাকায় ঢাকা পৌঁছাতে ট্রেনের দেরি হচ্ছে। তবে কমলাপুর থেকে দ্রুত ট্রেনের ইঞ্জিন পরীক্ষা, ট্রেন পরিষ্কার ও পানি ভরে যত দ্রুত সম্ভব ট্রেন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
মাসুদ সারোয়ার আরও বলেন, বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৬টি ট্রেন ছেড়েছে। এর মধ্যে দুটি ট্রেন দেরি করেছে। আগামী দিন থেকে ট্রেন ছাড়তে দেরি হবে না। ঈদযাত্রায় মানুষের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।