পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার শতবর্ষী স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে
পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ার শতবর্ষী স্থাপনাটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে

‘হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে ভাঙা হলো শতবর্ষী স্থাপনা’

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে গত ২৭ অক্টোবর ‘হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে ভাঙা হলো শতবর্ষী স্থাপনা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে ২৯ অক্টোবর প্রথম আলোয় ‘গেন্ডারিয়ার শতবর্ষী ভবন’ নামে সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয়র প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থাপনাটির মালিকপক্ষ।

প্রতিবাদপত্রে বলা হয়েছে, ভবনটি সরকারঘোষিত কোনো পুরাকীর্তি অথবা তালিকাভুক্ত ঐতিহাসিক স্থাপনা নয়। পুরান ঢাকার ২ হাজার ২০০ ভবন বা স্থাপনা পুরাকীর্তির অংশ দাবি করে আরবান স্টাডিজ নামের একটি সংস্থা উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত থেকে এই স্থাপনাগুলোতে সংস্কার বা ভাঙার বিষয়ে স্থিতাবস্থা জারি করে। সে অনুযায়ী প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে এ বিষয়ে জরিপের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই তালিকায় গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডে অবস্থিত ১৬ নম্বর বাড়িটি আছে কি না, তা মালিকপক্ষ জানে না। চলতি বছরের অক্টোবরে বাড়ি ভাঙার কাজ শুরুর আগে আদালত, প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর, আরবান স্টাডিজ অথবা সিটি করপোরেশন কারও পক্ষ থেকে কোনো নোটিশ পায়নি। ফলে হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করার অভিযোগটি ভিত্তিহীন।

প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়েছে, বাড়ি ভাঙার কাজ যখন প্রায় শেষ পর্যায়ে, তখন ২১ অক্টোবর গেন্ডারিয়া থানা থেকে জানানো হয়, দীননাথ রোডের ১৬ নম্বর বাড়ি ভাঙার বিষয়ে আরবান স্টাডিজ গ্রুপ থানায় জিডি করেছে। ওই দিন থানা থেকে ভবন ভাঙার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয। পরদিন ২২ অক্টোবর পর্যন্ত রাজউকের পক্ষ থেকে বাড়ির নম্বর তালিকাভুক্ত এমন কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি। ২৪ অক্টোবর রাজউকের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তাঁদের তালিকায় থাকা ৭৪টি ভবনের মধ্যে এই বাড়ি নেই। এ ছাড়া তাঁদের কাছে থাকা আরবান স্টাডিজের গ্রুপের ২ হাজার ২০০ ভবনের তালিকায়ও এ বাড়ির কথা উল্লেখ নেই। তবে সে তালিকার কয়েকটি পৃষ্ঠা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর এক দিন পর ২৫ অক্টোবর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর জানায়, তাদের তালিকায় এ বাড়ি আছে এবং তারা ভাঙার স্থিতাবস্থা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গেন্ডারিয়ার ১৬ নম্বর দীননাথ রোডের মালিকদের পক্ষ থেকে হাইেকার্টের আদেশ অমান্য বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে মালিকপক্ষ। তাদের দাবি, তাদের জানামতে আদালতের কোনো নির্দেশনা অমান্য করা হয়নি।

প্রতিবেদকের বক্তব্য

ওই শতবর্ষী ভবন ভাঙা নিয়ে প্রতিবেদন করা হয়েছে থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি হওয়ার পর। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও আরবান স্টাডিজের পক্ষ থেকে দুটি জিডির কপিতে উল্লেখ আছে—‘আদালতের দেওয়া ২২০০ বাড়ির তালিকার মধ্যে এ বাড়ি অন্তর্ভুক্ত’। এ প্রসঙ্গে গেন্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গেও প্রথম আলো কথা বলেছে। দীননাথ রোডের বাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকে যে প্রতিবাদ করা হয়েছে, তা মূলত আইনগত প্রক্রিয়ার কথা। বিষয়টি তাদের আদালত, প্রত্নতত্ত্ব অথবা রাজউকের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের বিষয়।