জলাশয় ভরাট করে টিস্যু কালচার ল্যাব নির্মাণ বন্ধের দাবি

রাজধানীর মিরপুরের গৈদারটেক এলাকায় জলাশয় ভরাট করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) টিস্যু কালচার ল্যাব নির্মাণকাজ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে নাগরিক সমাজ। ল্যাব নির্মাণকাজ বন্ধে এবং জলাশয় সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীকে গতকাল শুক্রবার একটি চিঠিও দিয়েছে তারা। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

নাগরিক সমাজের পক্ষে পাঠানো চিঠিতে স্বাক্ষর করেন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুলতানা কামাল, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সল, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির ও পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) গবেষণা অনুযায়ী, ১৯৯৫ সালে ঢাকায় জলাধার ও জলাভূমির পরিমাণ ছিল ২০ দশমিক ৫৮ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে কমে হয়েছে ২ দশমিক ৯১ শতাংশ। একটি আদর্শ শহরে ১০ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ জলাশয় থাকার কথা। তার বিপরীতে রাজধানীতে রয়েছে মাত্র ২ দশমিক ৯১ শতাংশ, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। জলাশয়গুলো ভরাটের প্রত্যক্ষ প্রভাবে সামান্য বৃষ্টিতে ঢাকা মহানগরে প্রচণ্ড ও দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতাকে চিহ্নিত করেছে নাগরিক সমাজ।

এ চিঠির মাধ্যমে ‘উন্নয়নের নামে জলাশয় ভরাট করা যাবে না’— প্রধানমন্ত্রীর এমন অনুশাসন এবং ঢাকার আশপাশের নদী ও খাল উদ্ধারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, ‘এ জলাশয় রক্ষায় হাইকোর্ট বিভাগে দায়ের করা একটি জনস্বার্থমূলক মামলা হয়েছে। হাইকোর্ট জলাশয়ে পুনরায় মাটি ভরাট এবং যেকোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে বিএডিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের অন্তর্বর্তীকালীন এ আদেশ স্থগিত করে হাইকোর্ট বিভাগে মামলাটি শুনানির আদেশ দিলে, বর্তমানে তা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।’

মিরপুর গৈদারটেক এলাকায় ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (২০২২-২০৩৫)-এ চিহ্নিত জলাশয় ভরাটসহ সব কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়ে নাগরিক সমাজ বলছে, প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করলে এ জলাশয় পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে, যা নগরীর জলাশয় সুরক্ষায় একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে স্থাপিত হবে।