রাজধানীর বেইলি রোডের ভবনটিতে ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়
রাজধানীর বেইলি রোডের ভবনটিতে ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়

বেইলি রোডের আগুন কফির দোকান ‘চুমুক’ থেকে

রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের নিচতলার ‘চুমুক’ নামের চা–কফির দোকানের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। তারা বলছে, সেখানে গ্যাসের উপস্থিতি থাকায় আগুন দ্রুত পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। ভবনে জরুরি বহির্গমন সিঁড়ি না থাকায় মানুষ চেষ্টা করেও বের হতে পারেনি।

বেইলি রোডে গত বৃহস্পতিবারের আগুনে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ঢাকার রমনা থানায় শনিবার হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার ভবনটির ব্যবস্থাপক মুন্সি হামিমুল আলমসহ চারজনকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, চুমুক নামের দোকান থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে দুই দোকানমালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। আগুন লাগার পর তাঁদের দোকানের কর্মীরা ফায়ার এক্সটিংগুইশার (আগুন নেভানোর সরঞ্জাম) ব্যবহার করে নেভানোর চেষ্টা করেন।

এদিকে মামলাটি থানা–পুলিশ থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশের রমনা বিভাগের সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ সালমান ফার্সী প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি এখন সিআইডি তদন্ত করবে।

অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে ঘটনার দিন রাতেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়।

এদিকে ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, চুমুক নামের দোকানটির চুলা থেকে আগুন লেগেছে। তদন্ত কমিটি এখন পর্যন্ত ১০ জনের বেশি মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

কোথাও আগুন লাগলে তা নেভানোর জন্য ঘটনাস্থলে যাওয়া এবং আহত মানুষদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত যে ধরনের ব্যবস্থাপনা থাকা দরকার, সেটা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এতে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করেন ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির প্রধান মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দেশে ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সংকটকালে ব্যবস্থাপনা) খুবই দুর্বল। কোনো ঘটনা ঘটলে উৎসুক জনতার ভিড়ের কারণে কাজ করা যায় না।’