চলতি বছর দেশে এক দিনে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল সোমবার সকাল আটটা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত) পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৬৭৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬১। আর চলতি জুলাইয়ের প্রথম চার দিনে মৃত্যু হলো ১৪ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলোয় ভর্তি হয়েছেন ৪২৯ জন। আর বাকি ২৪৯ জন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানিয়েছে, বর্তমানে দেশে মোট ১ হাজার ৬৬৯ ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আছেন ১ হাজার ১০০ জন। এ ছাড়া চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ৯ হাজার ৮৭১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম আজ প্রথম আলোকে বলেন, ডেঙ্গুতে মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ছে। ডেঙ্গু থেকে প্রতিরোধে এখন সবার সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার।
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাস পেরোনোর আগেই ডেঙ্গু জ্বরে ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৭৫৪ জন। দেশে কোনো বছরের প্রথম ছয় মাসে ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ রূপ আর কখনো দেখা যায়নি।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে দেরিতে ভর্তির কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এ বছর ডেঙ্গুতে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের ৮০ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তির এক থেকে তিন দিনের মধ্যে। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ৫০ জনের তথ্য পর্যালোচনা করে এটা জানতে পেরেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, মৃত ব্যক্তিদের বড় অংশ কর্মক্ষম। আর বেশি মারা যাচ্ছেন নারীরা।
দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী মারা যায় গত বছর—২৮১ জন। এর আগে ২০১৯ সালে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ২০২০ সালে ৭ জন, ২০২১ সালে ১০৫ জন মারা যান।