প্রথমে বন্ধ একটি অন্ধকার কক্ষে এক মিনিট অবস্থান করতে হবে। এক মিনিট পরে আরেকটি আলোকিত রঙিন কক্ষে আরও এক মিনিট থাকতে হবে। অন্ধকার কক্ষ থেকে আলোকিত কক্ষে প্রবেশের পর অনুভূতির কী ধরনের পরিবর্তন হলো, সেটির মাধ্যমে বোঝা যাবে মানসিক অবস্থা।
এই দুই কক্ষের পাশের স্টলেই আছেন একজন মনোবিজ্ঞানী। তাঁর কাছে ওই দুই কক্ষে ঘুরে আসা মানুষ আসছেন। তিনি তাঁদের কাছে ছোট ছোট দু-একটি প্রশ্ন করছেন। কিছুক্ষণ পর জানিয়ে দিচ্ছেন, মানসিকভাবে কে কেমন আছেন! পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়েও পরামর্শ দিচ্ছেন উপস্থিত মনোবিজ্ঞানী।
শুক্রবার ছুটির দিনে বাংলা একাডেমিতে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন দেখা গেল। ‘শান্তিবাড়ি’র উদ্যোগে এখানে চলছে ‘ভালো থাকার উৎসব’। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত।
ভালো থাকার এই উৎসব আর্ট ক্যাম্প ও আর্ট এক্সিবিশন, নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনী, মেলা ও গানের অনুষ্ঠানসহ আকর্ষণীয় নানা কর্মসূচি দিয়ে সাজানো হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ জন নারী উদ্যোক্তা অংশ নিয়েছেন। গতকাল সকাল ১০টায় উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।
ভালো থাকার উৎসবে শান্তিবাড়ির মনোবিদ, আইনজীবী ও পুষ্টিবিদের উপস্থিতি ও তত্ত্বাবধানে তিনটি বুথ পরিচালিত হচ্ছে। এসব বুথে বিনা মূল্যে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ, আইনি পরামর্শ ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস–সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া উৎসবে থাকছে বিশেষ ইয়োগা সেশন, মিউজিক হিলিং সেশন ও বিশেষ মানসিক স্বাস্থ্য সেশন।
আগামীকাল উৎসবের শেষ দিন বিকেলে বিশেষ সমাপনী অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল চারটায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে। এতে স্বনামধন্য নাট্যশিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব দিলারা জামান নিজের জীবন ও লড়াইয়ের গল্প বলবেন। ড. জাকিয়া সুলতানার পরিচালনায় বিশেষ প্যানেল আলোচনা ‘নারীর বন্ধু বনাম নারীর লড়াই’ অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের ভালো থাকার উৎসবে একজন কৃতী নারীকে ‘শান্তিবাড়ি শান্তিময়ী’ সম্মাননা দেওয়া হবে। শান্তিময়ী সম্মাননা ২০২৫ গ্রহণ করবেন কৃতী ফুটবলার, ক্রীড়াবিদ রেহানা পারভীন। পাশাপাশি উৎসবে অংশগ্রহণ করা উদ্যোক্তাদের মধ্যে একজন সেরা উদ্যোক্তাকেও সম্মাননা দেওয়া হবে।
সমাপনী অনুষ্ঠান শেষ হবে সংগীত পরিচালক নির্ঝর চৌধুরী ও তাঁর সহশিল্পী সেমন্তী মঞ্জরী, অর্ণব, প্রতীতির পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। তাঁরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতিনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’পরিবেশন করবেন।
শান্তিবাড়ি নারীদের জন্য নিবেদিত একটি প্রতিষ্ঠান। ২০২২ সালের জুন মাসে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠান নারীর মানসিক স্বাস্থ্য এবং আইনি অধিকার সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে। পাশাপাশি মনোরোগ, নারীর স্বাস্থ্য, পারিবারিক সমস্যা, প্যারেন্টিং, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং, আইনি অধিকার, ইয়োগা, মেডিটেশনসহ নানা বিষয়ে সেশনও হয় শান্তিবাড়িতে।