ঢাকা উড়ালসড়ক দিয়ে প্রথম ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) চলেছে ২২ হাজার ৮০৫টি যানবাহন। আর এই সময়ে মোট টোল আদায় হয়েছে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৮৮০ টাকা। সেতু বিভাগ সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যানবাহন চলেছে বিমানবন্দর থেকে কামাল আতাতুর্ক হয়ে মহাখালী দিয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত। এই পথে যানবাহন চলেছে ১২ হাজার ২৪২টি। এরপর তেজগাঁও থেকে মহাখালী হয়ে কামাল আতাতুর্ক দিয়ে কুড়িল পর্যন্ত বেশি যানবাহন চলেছে। এই পথে চলেছে ৫ হাজার ২৪৬টি যান। বনানী থেকে কুড়িল পর্যন্ত চলেছে ২ হাজার ৮৯২টি যানবাহন। আর কুড়িল থেকে কামাল আতাতুর্ক হয়ে মহাখালী দিয়ে ফার্মগেট পর্যন্ত ২ হাজার ৪২৫টি যানবাহন চলেছে।
রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত ঢাকা উড়ালসড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) গত শনিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রোববার সকাল ছয়টা থেকে পুরোদমে সাধারণ যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
তবে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ঢাকা উড়ালসড়ক দিয়ে অল্প সময়েই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাওয়া সম্ভব হলেও নামার পর যানজটে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। দ্রুত আসা যানবাহনগুলো ঢাকার তেজগাঁও ও ফার্মগেটে যানজট বাড়িয়ে দিচ্ছে। গতকাল সকাল থেকেই ফার্মগেটের কাছে ইন্দিরা রোডে উড়ালসড়ক থেকে নেমে যানজট দেখা যায়। সন্ধ্যায় এই জট আরও বাড়ে।
সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রীবাহী বাস তেমন একটা চলতে দেখা যায়নি। ট্রাকও নজরে আসেনি। কাভার্ড ভ্যান দু-একটা চলেছে। বেশির ভাগই ব্যক্তিগত গাড়ি। এর মধ্যে অনেকেই শখের বশে দেখার জন্য উড়ালসড়কে টোল দিয়ে পাড়ি দিয়েছেন।
সরকারের পক্ষে উড়ালসড়ক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেতু বিভাগ। আর বিনিয়োগ, নির্মাণ, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে তিনটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে থাইল্যান্ডভিত্তিক ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি, চীনের শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ও সিনো হাইড্রো করপোরেশন।
উড়ালসড়কটিতে ওঠানামার জন্য ৩১টি স্থান থাকছে। এসব ওঠানামার স্থান ধরলে উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য দাঁড়ায় ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এই উড়ালসড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।
বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি অনুসারে, উড়ালসড়ক দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ প্রায় ৮০ হাজার যানবাহন চলাচল করবে বলে ধারণা করা হয়, আর সর্বনিম্ন যানবাহন চলাচল করতে পারে সাড়ে ১৩ হাজার। ৮০ হাজারের বেশি যানবাহন চলাচল করলে বাড়তি যে টোল আদায় হবে, এর ২৫ শতাংশ বাংলাদেশ পাবে। অন্যদিকে সাড়ে ১৩ হাজারের চেয়ে কম যানবাহন চলাচল করলে বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারকে।