বিএনপির তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সতর্ক অবস্থানে আছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
বিএনপির সন্ত্রাস-নৈরাজ্য থেকে জানমালের নিরাপত্তা দিতে কেন্দ্রের নির্দেশে তাঁরা মাঠে আছেন বলে জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে আছে, সেই বার্তাও দিতে চান তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কল্যাণপুর, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শ্যামলী, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের আদাবর ও বাবর রোড এবং ১০ নম্বর ওয়ার্ডের গাবতলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাসস্ট্যান্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। চেয়ার পেতে কাছাকাছি বসে আছেন। প্রতিটি মোড়ে ২০ থেকে ২৫ জন আছেন।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, ইউনিট আওয়ামী লীগের নেতাদের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাঁদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, যেদিন বিএনপির অবরোধ-হরতাল থাকবে, তাঁরা এভাবে সতর্ক অবস্থানে থাকবেন।
কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিজান টাওয়ারের নিচে বসেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা। তাঁদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ উল্ল্যাহ কায়সার ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম (নিক্কন)।
মোহাম্মদ উল্ল্যাহ কায়সার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্দোলনের নামে বিএনপি যেন রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস ও জনগণের ক্ষতি না করতে পারে, সে জন্য আমরা মাঠে আছি। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী হিসেবে আমাদের দায়িত্ব রয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পালাক্রমে নেতা-কর্মীরা মাঠে থাকবেন।’
আজ সকাল থেকে বিএনপির তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশব্যাপী রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথে সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামীও। এই কর্মসূচির বিপরীতে মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
শ্যামলী টাওয়ারের নিচে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা চেয়ার পেতে বসেছেন। সেখানে আছেন ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ফোরকান হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে আমরা মাঠে আছি। বিএনপিকে জ্বালাও-পোড়াওয়ের আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।’
৩২ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি জায়গায় নেতা-কর্মীদের অবস্থান নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে শ্যামলী স্কয়ার শপিং মলের নিচে, বাবর রোডে অনুরাগ রেস্তোরাঁর সামনে এবং লালমাটিয়ায় আড়ংয়ের সামনে।
শ্যামলীতে ৫ নম্বর শ্যামলী ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি রুস্তম আলী এবং বাবর রোডে ৬ নম্বর বাবর রোড ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম এলাকা ভাগ করে দিয়েছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করবেন।
বাবর রোডে অবস্থান নেওয়া নেতা-কর্মীদের কারও কারও হাতে বাঁশ ও কাঠের লাঠি দেখা যায়। লাঠিতে দলীয় পতাকা বাঁধা৷ অন্য এলাকায় অবস্থান নেওয়া নেতা-কর্মীদের কাছে এমন লাঠি দেখা যায়নি।
দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গাবতলী বাস টার্মিনালের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।