বিকেলে টিকিট বিক্রি শুরু, ছাড়ছে দূরপাল্লার বাস

বিএনপির অবরোধের কারণে দুই দিন পর দূরপাল্লার বাস ছাড়ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশে ঢাকার গাবতলীর বাস টার্মিনালের টিকিট কাউন্টারে আসেন লোকজন। আজ সোমবার বিকেল ৩টার দিকে
ছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

সকাল থেকে বন্ধ ছিল দূরপাল্লার বাস চলাচল। যাত্রী না থাকায় টিকিট কাউন্টারগুলোও রাখা হয়েছিল বন্ধ। তবে বিকেলের দিকে বাস টার্মিনালে যাত্রীদের উপস্থিতি দেখা গেছে। বাস ছাড়ার উদ্দেশ্যে টিকিটও বিক্রি শুরু করেছেন দূরপাল্লার বিভিন্ন গন্তব্যের বাস কোম্পানির প্রতিনিধিরা। কিছু কিছু দূরপাল্লার বাস গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়েও যেতে দেখা গেছে।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর গাবতলী ও মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। এর আগে সকালে গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়তে দেখা যায়নি। আর মহাখালী টার্মিনাল থেকে শুধু এনা পরিবহনের ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের বাসগুলো ছাড়তে দেখা গেছে। সকালে এই টার্মিনাল থেকে অন্য কোনো পরিবহন কোম্পানির বাস ছাড়েনি।

বেলা তিনটার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনালে যাত্রীদের উপস্থিতি মোটামুটি রয়েছে। কয়েকজন করে যাত্রী টার্মিনালে আসছেন, টিকিটের খোঁজ করছেন। পরিবহনশ্রমিকেরাও টার্মিনালে কোনো যাত্রী যাওয়ামাত্র এগিয়ে গিয়ে কোথায় যাবেন জানতে চাইছেন। বাস ও গন্তব্যের নাম বলে যাত্রীদের ডাকাডাকিও করা হচ্ছে।

বেলা সোয়া তিনটার দিকে হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টার মাস্টার মো. জাভেদ প্রথম আলোকে বলেন, সারা দিন কোনো গাড়ি ছাড়া হয়নি। বিকেল সাড়ে চারটায় প্রথম বাস ছাড়া হবে। বাসটি খুলনা যাবে। ইতিমধ্যে ওই বাসের ১৪টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। আর বিকেল পাঁচটার বাসের জন্য দুটি টিকিট বিক্রি হয়েছে। রাতে সাতটি বাস ছাড়ার সূচি আছে। যাত্রী পেলে সব কটিই ছাড়া হবে।

গাবতলীতে যাত্রী এলেই এগিয়ে যাচ্ছেন বাস কোম্পানির লোকজন

গাবতলী টার্মিনালে দূরপাল্লার যেসব পরিবহনের টিকিট কাউন্টার বন্ধ দেখা গিয়েছিল, বিকেলে গিয়ে ওই সব বাস কোম্পানির টিকিট কাউন্টারগুলো খোলা দেখা গেছে। প্রতিনিধিরা কম্পিউটার চালু করে খাতা-কলম আর টিকিট নিয়ে বিক্রির জন্য প্রস্তুত ছিলেন। কিছু কাউন্টারের যাত্রীদের টিকিটের জন্য যোগাযোগ করে কথা বলতেও দেখা গেছে।

গাবতলীতে শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের কাউন্টার মাস্টার আমিনুল ইসলাম বলেন, কিছু কিছু যাত্রী টিকিটের গাড়ি ছাড়া হবে কি না, কখন ছাড়বে, টিকিট বিক্রি হচ্ছে কি না—এসব খোঁজ করছে। কিন্তু বাস ছড়ার মতো পর্যাপ্ত যাত্রী পাওয়া যাবে কি না, তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না। তবে বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে গাড়ি ছাড়ার উদ্দেশ্যে দুটো টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। যাঁরা টিকিট কিনেছেন, তাঁদের বলা আছে, যাত্রী না হলে বাস ছাড়বে না।

পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মহাখালী বাস টার্মিনালেও দূরপাল্লার বিভিন্ন গন্তব্যের বাসের টিকিট বিক্রি করা হয়। টার্মিনাল থেকে যে অংশ দিয়ে বাসগুলো ছেড়ে যায়, সেই অংশে কয়েকটি বাস ছেড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রীদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া পৌনে চারটা থেকে চারটার মধ্যে এনা ও মাদারগঞ্জ পরিবহনের দুটি বাস ছেড়ে গেছে।

বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে মহাখালী থেকে ছেড়ে যায় জামালপুর মাদারগঞ্জগামী মাদারগঞ্জ স্পেশাল নামের একটি বাস। বাসটিতে যাত্রী ছিল মাত্র ৬ জন। বাসের চালক মো. সোলায়মান বলেন, সারা দিন গাড়ি বসা ছিল। বিকেলে কয়েকজন যাত্রী পেয়েছেন। তাই বসে না থেকে রওনা দিলেন। রাস্তা থেকে কিছু যাত্রী পেলে খরচ উঠবে।

এ সময় নেত্রকোনার নলছাপড়াগামী এস এস ট্রাভেলস, টাঙ্গাইলে মধুপুর-জামালপুরের ধনবাড়িগামী বিনিময় পরিবহন, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটগামী শ্যামলী বাংলা, ময়মনসিংহগামী সৌখিন এক্সপ্রেস বাসগুলো ছাড়ার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত রাখতে দেখা যায়। এসব বাসের কর্মীরা টার্মিনালে কোনো যাত্রী গেলেই ডাকাডাকি করে কোথায় যাবেন জানতে চাইছিলেন।