রংতুলি দিয়ে নিজেদের মতো করে টি-শার্ট রং করেছে তিন বন্ধু। আজ বর্ণমেলায় আসা শিশুদের অনেককেই এমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে
রংতুলি দিয়ে নিজেদের মতো করে টি-শার্ট রং করেছে তিন বন্ধু। আজ বর্ণমেলায় আসা শিশুদের অনেককেই এমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে

‘মনে যা এসেছে’ তা–ই আঁকছে বর্ণমেলায় আসা শিশুরা

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী লাইবা রহমান ও নুসাইবা বিনতে নেফাউর। তারা দুজন খুব ভালো বন্ধু। রাজধানীর ধানমন্ডির সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে চলা বর্ণমেলার বর্ণায়ন স্টল থেকে সাদা রঙের দুটি টি-শার্ট কেনে তারা। এই স্টল থেকেই দেওয়া হচ্ছে রং ও তুলি। সেই রংতুলিতে নিজেদের মতো করে তারা টি-শার্ট দুটি রং করে। ভালো বন্ধু হওয়ায় দুজন পাশাপাশি দাঁড়ালে যেন তাদের হৃদয় এক হয়, সে জন্য হৃৎপিণ্ড বা হৃদয়ের একটি করে অংশ এঁকেছে তারা।

লাইবা ও নুসাইবার বন্ধু সানিহা তারনীমও এ সময় ছিল। তারা তিনজনে টি-শার্ট কিনে ইচ্ছেমতো রং করতে পেরে ভীষণ খুশি। তারা বলে, ‘আমাদের মনে যা এসেছে, তা–ই এঁকেছি। আমাদের খুব ভালো লাগছে।’

বর্ণায়ন স্টলের কর্মী সুমন চন্দ্র রায় বলেন, ১০০ টাকায় আমরা টি-শার্ট দিচ্ছি। সেই সঙ্গে রং ও তুলি দিচ্ছি ফ্রি। বাচ্চারা রংতুলি দিয়ে নিজেদের মতো করে তাদের টি-শার্ট রং করছে।

দেখা যায়, শিশুদের আঁকায় আগ্রহ থাকায় জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বর্ণায়ন স্টল।

২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে প্রথম আলো আয়োজন করেছে বর্ণমেলা। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্র্যান্ড মেরিল বেবি। সহযোগিতা করছে সেপনিল, সুপারমম ও প্রচার সহযোগী এটিএন বাংলা।

এই বর্ণমেলার বর্ণ মেহেদি স্টলে গালে ‘অমর ২১’ আঁকে ৭ বছর বয়সী নওসাবা তারান্নুম। মা খাদিজা আক্তারের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে সে বলে, ‘ছবি এঁকেছি। হাতের লেখা লিখেছি। গালে “অমর ২১” আঁকিয়েছি। গালে আঁকা আমার বেশি ভালো লেগেছে।’

চলছে বায়স্কোপ, দেখতে উন্মুখ দুই শিশু

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বর্ণমেলার খবর পেয়ে রাজধানীর কলাবাগান থেকে মেয়েকে নিয়ে আসেন খাদিজা আক্তার। তিনি বলেন, ‘গতবারও এসেছিলাম মেয়েকে নিয়ে। এখানে এলে বাচ্চারা অনেক কিছুর সঙ্গে পরিচিত হতে পারে। ওরা খুব খুশি হয়। আজ মেয়ে আমার অনেক খুশি। এসব কারণেই এসেছি।’

বর্ণ মেহেদির পাশের স্টল বর্ণ মুখোশ। এই স্টলের শিল্পী তাসনীমা ইসলাম বলেন, ‘বর্ণ দিয়ে মুখোশ এবং বাংলার বিভিন্ন প্রাণীর মুখোশ তৈরি করেছি। সেই সঙ্গে খালি সরা বিক্রি করছি। সঙ্গে রং ও তুলি ফ্রি দিচ্ছি। সরায় শিশুরা ছবি এঁকে নিতে পারছে।’

কাকতাড়ুয়া পাপেট থিয়েটারের স্টলে পুতুল বিক্রি হচ্ছে। পুতুল কিনলে বায়স্কোপ দেখা ফ্রি। পুতুল কেনা ছাড়াও বায়স্কোপ দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।

এসব ছাড়াও বর্ণমেলায় রয়েছে বর্ণপ্রযুক্তি, বর্ণ উপহার, মন্ত বর্ণ, খাবারে-পোশাকে বর্ণ, কাগজের ইশকুল, বর্ণে নাগরদোলা, সিসিমপুর, বাবুল্যান্ড, গুফি ওয়ার্ল্ড, কিডস টাইম, ঢাকা পাপেট থিয়েটার, কাকতাড়ুয়া পাপেট, জাদু, গানসহ বর্ণ নিয়ে নানা আয়োজন। আরও আছে বই বর্ণালিতে প্রথমা প্রকাশন, কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা, অন্য রকম বিজ্ঞানবাক্স, ঢাকা কমিকস এবং মেরিল বেবি বর্ণিল বর্ণ, সুপারমমের বাড়ি, সেপনিল আমার বর্ণ আমার হাতে। বর্ণায়নে রয়েছে মা–বাবার জন্য টি-শার্টে নকশা করার সুযোগ।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, নানা আয়োজনে মেলায় শিশু ও অভিভাবকেরা আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত।