ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ছাত্রলীগের এক আলোচনাসভায় সামনের সারিতে বসা নিয়ে কথা-কাটাকাটির জেরে মারামারিতে জড়িয়েছেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রী হল শাখা ও ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় বিচার দাবি করেছেন ইডেনের নেত্রীরা। তবে ইতিমধ্যে বিষয়টির সমাধান হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রলীগ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভা চলাকালে বাহাসের পর সভা শেষে টিএসসি মিলনায়তনের প্রবেশপথে ইডেনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মারামারিতে জড়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, শামসুন নাহার হল ও রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে আজ বুধবার বিকেলের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের ফটকে জড়ো হন ইডেন কলেজ শাখার একদল নেত্রী। এই হলে থাকেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ। জানতে চাইলে একাধিক নেত্রী জানান, ১ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় ছাত্রলীগের সমাবেশের বিষয়ে তাঁরা শেখ ওয়ালী আসিফের সঙ্গে কথা বলবেন। একই সঙ্গে গতকালের ‘হামলার’ বিচারও চাইবেন।
গতকালের ওই সভায় উপস্থিত ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, সভায় প্রথম দিকের সারিগুলোতে বসেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হল শাখাগুলোর নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি তামান্না জেসমিনসহ কয়েকজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেত্রীদের পেছনে গিয়ে বসতে বলেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেত্রীরা এতে অস্বীকৃতি জানান। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তামান্না জেসমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের এক নেত্রীর মুখে সামান্য আঘাত করেন। পরে সভা শেষে টিএসসি মিলনায়তনের প্রবেশপথে ইডেনের নেত্রীদের আটকান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেত্রীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।
ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বসা নিয়ে ছোট বোনদের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছিল। তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখার পদপ্রত্যাশী। আমরা কেন্দ্রীয় পদধারীরা বসতে চাইলে তাঁরা চেয়ার ছেড়ে উঠতে চাননি। পরে কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতা এসে তাঁদের সরিয়ে দেন। সভা শেষে বের হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখার ওই পদপ্রত্যাশীরা আমাদের আটকে ঝামেলা করার চেষ্টা করেন।’
অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী এক নেত্রীর ভাষ্য, ‘ইডেনের নেত্রীরা আমাদের কর্মীদের মুখে ধরে বাজে ব্যবহার করেছেন। সভা শেষে আমরা তামান্না জেসমিনের কাছে বিচার চাইতে গেলে তিনি আমাদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। আমরা আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছি মাত্র।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল দুপুরের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বিষয়টি গতকালই সমাধান করা হয়েছে। ঘটনার বিচার-বিশ্লেষণ করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও আমরা ভাবছি।’ তিনি আরও বলেন, বিচার চাইতে নয়, ইডেন কলেজের নেতা-কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন ১ সেপ্টেম্বরের সমাবেশ নিয়ে কথা বলতে।