গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত কুইন স্যানিটারি মার্কেটের বেজমেন্টে দেহাবশেষের কিছু অংশ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বেজমেন্টের সামনের এক পাশে এই দেহাবশেষ পাওয়া যায়।
ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের ভাইস প্রিন্সিপাল আনোয়ারুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘উদ্ধারকারীরা বেজমেন্টের ভেতরে ঢুকেছে। আমরা সাসপেক্ট করছি, এখানে ভিক্টিম থাকার সম্ভবনা রয়েছে। নিখোঁজ ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন যেখানে ভিক্টিম বসত (দোকানে) বলেছে, সেই জায়গাতেই উদ্ধারকারীরা প্রবেশ করেছে। উদ্ধারকারীরা ম্যানুয়ালি সরাচ্ছে। সেখানে অবজেক্ট (দেহাবশেষ) আছে। এটি কার, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
আনোয়ারুল হক আরও বলেন, ‘সকাল থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছি। উদ্ধার অভিযানে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করতে পারছি না। ছোট ছোট জিনিস আস্তে আস্তে অপসারণ করার চেষ্টা করছি। আমরা এসে দেখি, বেজমেন্টে ৩ থেকে ৪ ফুট পানি জমে গিয়েছিল। পরে পাম্প দিয়ে পানি অপসারণ শুরু করেছি।’
আনোয়ারুল হক বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দিচ্ছে ওয়াসার পানির লাইন রয়েছে এখানে, যার কারণে পানি ভরে যাচ্ছে। এখানে আমাদের পাম্প দিয়ে পানি অপসারণ করছি। ওয়াসাকে বলেছি, কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে।’
আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে তৃতীয় দিনের উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। সাততলা ভবনের বেজমেন্টে জমে থাকা পানি অপসারণ শুরু করেন তারা।
গত মঙ্গলবার বিস্ফোরণের পর গতকাল বুধবার পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান শেষ করতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির বেজমেন্টে উদ্ধার অভিযান চালাতে প্রয়োজন শোরিং (ঠেক দেওয়ার) নামের বিশেষ যন্ত্রের, যা ফায়ার সার্ভিসের কাছে নেই।
আজকের উদ্ধার কার্যক্রমে কোনো ভারী যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে না। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বালতিতে করে বেজমেন্টের পানি অপসারণ করছেন৷ ভবনের ভাঙা অংশও বালতিতে ভরে বের করে আনছেন।
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের সাততলা ও পাঁচতলা দুটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুইন মার্কেটের সাততলা ভবনটির বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়। রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।