ঢাকায় প্রয়াত শিল্পী কালিদাস কর্মকার ও তাঁর তিন ভাইয়ের চিত্রকর্মের প্রদর্শনী শুরু

বরেণ্য শিল্পী কালিদাস কর্মকারের স্মরণে আয়োজিত প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন অতিথিরা। সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে বুধবার সন্ধ্যায়
ছবি:  প্রথম আলো

বরেণ্য শিল্পী কালিদাস কর্মকার যন্ত্রণার ছবিই এঁকেছেন। প্রকাশ করেছেন নিজের ভেতরের আগুন। তাঁর সব শিল্প বিশ্বের কাছে বারবার তুলে ধরেছে বাংলাদেশকে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইরান—বহু দেশে তিনি পৌঁছে দিয়েছেন বাংলাদেশের কথা। বরেণ্য শিল্পী কালিদাস কর্মকারের প্রয়াণ দিবসে আয়োজিত প্রদর্শনীতে বক্তারা এসব কথা বলেন।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে সফিউদ্দীন শিল্পালয়ে বুধবার সন্ধ্যায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের উপাচার্য রুবানা হক বলেন, ৫০টির বেশি দেশে শিল্পী কালিদাস কর্মকারের চিত্রকর্মের ৭০টির বেশি প্রদর্শনী হয়েছে। তিনি যান্ত্রিকতার যুগে মানুষের কোমল হৃদয়ের কথা বলা শিল্পী। যন্ত্রণাকে রূপ দিতেন রংতুলিতে।

বংলাদেশে মার্কিন দূতাবাসের জনসংযোগ কাউন্সেলর স্টিফেন ইবেলি বলেন, শিল্প হচ্ছে দেশের সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় প্রকাশ। ঢাকায় বিভিন্ন প্রদর্শনী এবং আন্তর্জাতিক মানের সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজিত হয়। এটা বাংলাদেশের একটি ইতিবাচক দিক। এর মধ্যে কালিদাস কর্মকারের অনেক কাজ যুক্তরাষ্ট্রে প্রদর্শিত হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। তাঁর স্মৃতিচারণায় উঠে আসে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের দিল্লিতে কালিদাস কর্মকারের সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের কথা। তিনি বলেন, শিল্পীরা সব সময় শুভ ও সুন্দরের কথা বলবেন। তাহলেই মানুষের চেতনা জাগ্রত হবে।

প্রদর্শনীতে ৬৩টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে ২২টি চিত্রকর্ম শিল্পী কালিদাস কর্মকারের। অন্যগুলো তাঁর তিন ভাইয়ের আঁকা। শিল্পীর অন্য তিন ভাই হলেন দীলিপ কে কুমার, প্রশান্ত কর্মকার ও দেবদাস কর্মকার। তাঁরাই এই যৌথ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন।

অনুষ্ঠান শুরু হয় শিল্পী শহিদুল হকের কণ্ঠে ‘চরণ ধ্বনি শুনি, তব নাথ’ গানটি দিয়ে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন অতিথিরা। এখানে উডকাট, মিশ্র মাধ্যম, স্কেচে আঁকা ছবিগুলোতে কখনো লালন এবং তাঁর একতারা আছে। আছে ষাঁড়ের ঘূর্ণনের মধ্য দিয়ে শক্তি প্রদর্শনের কথা। কখনো উঠে এসেছে বুদ্ধর শান্ত সৌম্য নানা রকম মুখচ্ছবি।

প্রদর্শনী চলবে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে দর্শকদের জন্য।