পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে পাহাড়ের মানুষকে এখনো এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। পাহাড়ি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এই চুক্তি বাস্তবায়ন জরুরি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে শনিবার আয়োজিত এক সংহতি আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম আত্মপ্রকাশ করে। প্ল্যাটফর্মটির প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের জন্য ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সই হয়। এর মাধ্যমে পার্বত্য এলাকায় দুই দশকের সশস্ত্র সংঘাতের অবসান হয়। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এ চুক্তি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)।
সভায় এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, ‘সরকার স্বেচ্ছায় হোক বা চাপে পড়ে হোক, এই পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু এই চুক্তি যদি বাস্তবায়িত না হয়, তবে জাতি হিসেবে আমরা প্রতারক হয়ে থাকব। পাহাড়ি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় চুক্তি বাস্তবায়ন জরুরি।’
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, চুক্তি বাস্তবায়ন করতে গেলে প্রথমেই রাজনৈতিকভাবে ঐকমত্য থাকতে হবে। কিন্তু যে দলটি করেছিল, তাদের যে রাজনৈতিক দর্শন, আমার মনে হয় না তারা দলীয়ভাবেও একমত ছিল।
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, সরকার বলছে পার্বত্য চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৬৫টি ধারা বাস্তবায়ন করেছে। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে, এই চুক্তি বাস্তবায়নের প্রকৃত চিত্র জনগণের সামনে নিয়ে যাওয়া।
সূচনা বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, গত বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৫ বছর পেরিয়ে গেল। কিন্তু দেখা গেল, পার্বত্য চুক্তির মূল ধারাগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। তাই আমরা এই চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনকে বেগবান করতে একটি প্লাটফর্ম গড়ে তুললাম। এক বছরে আমরা নানাভাবে এই চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলেছি। এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
প্ল্যাটফর্মের যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক খায়রুল ইসলাম চৌধুরী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সংস্কৃতি কর্মী শাহেদ কায়েস, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য শরিফ সমশির, সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাবেক সভাপতি সুলভ চাকমা।