কদমতলীর দনিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল নোট, জাল নোট তৈরির সরঞ্জামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা, ৮ জুন
কদমতলীর দনিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে জাল নোট, জাল নোট তৈরির সরঞ্জামসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা, ৮ জুন

এখন ১০০, ২০০ টাকার নোটও জাল করেন তিনি

প্রায় ২৫ বছর ধরে জাল টাকা বানিয়ে বাজারে ছড়িয়ে দিয়েছেন লিয়াকত হোসেন ওরফে জাকির। আগে ৫০০ ও ১ হাজার টাকার নোট জাল করতেন। এখন ১০০, ২০০ টাকার নোটও জাল করেন লিয়াকত। গত এক যুগে ছয়বার গ্রেপ্তার হলেও জামিনে বেরিয়ে এসে আবার একই কাজ শুরু করেন তিনি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মশিউর রহমান প্রথম আলোকে এসব কথা জানান।
রাজধানীর কদমতলীর দনিয়া এলাকায় আজ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে লিয়াকতসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। বাসা থেকে সোয়া এক কোটি জাল টাকাসহ জাল টাকা তৈরির বিভিন্ন উপকরণ জব্দ করেছে পুলিশ।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে লিয়াকত স্বীকার করেছেন, তাঁর নেতৃত্বে দনিয়ার বাসায় জাল টাকা তৈরি হচ্ছিল। বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ ১ হাজার, ৫০০, ২০০ ও ১০০ টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়েছে।

এক যুগে ছয়বার গ্রেপ্তার লিয়াকত

ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমানের ভাষ্য, রাজধানীতে জাল টাকা তৈরির অন্যতম কারিগর হচ্ছেন লিয়াকত। দেশব্যাপী তাঁর নেটওয়ার্ক রয়েছে। ১১ বছর আগে প্রথম গ্রেপ্তার হন লিয়াকত। এরপর গ্রেপ্তার হন ২০১৮ সালে। পরে তিনি গ্রেপ্তার হন ২০২০ সালে। এবারসহ ছয়বার গ্রেপ্তার হন তিনি। প্রতিবার তাঁর কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের জাল টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর আবার জাল টাকা তৈরি করতে শুরু করেন লিয়াকত।

মশিউর রহমান বলেন, পুলিশের নজরদারির কারণে ২০২০ সালের পর লিয়াকত ঢাকা থেকে বাগেরহাট ও খুলনায় গিয়ে আত্মগোপন করেন। সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে জাল টাকার কারবার চালিয়ে আসছিলেন। এরপর আবার ঢাকায় ফেরেন তিনি। এর পর থেকে সহযোগী লিমা আক্তারের দনিয়ার বাসায় জাল টাকা তৈরি করে আসছিলেন লিয়াকত। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে আজ বিপুল অঙ্কের জাল টাকা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা মশিউর রহমানের ভাষ্য, জাল টাকা যাঁদের দিয়ে বানান, তাঁদের বেতন দেন দুই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা। সহযোগী কেউ গ্রেপ্তার হলে লিয়াকত ওরফে জাকির মাজারে গিয়ে আত্মগোপন করেন। এ জন্য তাঁকে কেউ কেউ ‘মাজার জাকির’ বলে থাকেন। অনেকেই তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে জাল টাকার ‘ঘরোয়া কারখানা’ গড়ে তোলেন। তাঁদের কাছে তিনি ‘গুরু জাকির’ বলে পরিচিত।