পয়লা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস একই দিন উদ্যাপিত হয়ে আসছে বছর কয়েক ধরে। বিশেষ এই দিনটি ঘটা করেই পালন করে থাকেন যুগলেরা। এ দিন বাসন্তী সাজে বেড়াতে বের হওয়া আর উপহার হিসেবে ফুল দেওয়ার প্রচলন রয়েছে।
বাহারি বাসন্তী পোশাকের সঙ্গে তরুণীরা এ দিন ফুল দিয়ে সাজগোজ করেন। গাঁদা ফুলের মালার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুল দিয়ে বানানো মুকুট পরে থাকেন কেউ কেউ। ছেলেরা পরেন নানা রঙের পাঞ্জাবি। আবির উৎসবেও মাতেন অনেকে। বরাবরের মতো রাজধানী ঢাকায় এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
পয়লা ফাল্গুন আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবস গত কয়েক বছর একই দিনে পড়েছে। আগে পয়লা ফাল্গুন উদ্যাপিত হতো ১৩ ফেব্রুয়ারি। পরদিন তথা ১৪ ফেব্রুয়ারি থাকত বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জির সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলা বর্ষপঞ্জির সংস্কার করায় এখন একই দিনেই পড়েছে দুটি উৎসব।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন উদ্যান আর লেকের পাড়ে তরুণ-তরুণীদের পদচারণা ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ও বইমেলা ছিল উৎসবমুখর। অবশ্য অফিস-আদালত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় দুপুরের পর ভিড় বাড়ে।
এ দিন স্থায়ী ফুলের দোকান ছাড়াও উদ্যান ও লেকের পাড়ে বসেছিল অস্থায়ী ফুলের দোকান। অনেকে হেঁটে হেঁটে ফুল বিক্রি করেছেন। মোড়ে মোড়ে দোকান বসিয়েও ফুল বিক্রি করতে দেখা গেছে। এসব দোকানে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হয় ৫০ টাকায়।
হাতিরঝিল সংলগ্ন মীরবাগ এলাকায় দুপুরে আগে মো. মিলন নামের এক তরুণকে ফুল বিক্রি করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, প্রতিটি গোলাপ বিক্রি করছেন ৫০ টাকা। বিক্রিও বেশ ভালো। হাতিরঝিল সংলগ্ন মধুবাগ মোড়ে গাড়ি মেরামতের দোকানে ফুলের দোকান বসান শফিক মাহমুদ। পেশা অন্য হলেও বিশেষ দিনটিতে ফুলের ব্যবসা করছেন বলে জানান।
হাতিরঝিলের মহানগর আবাসিক এলাকার মোড়ে ফুটপাতে অস্থায়ী ফুলের দোকান দেন মো. সিয়াম। এবার উচ্চমাধ্যমিক পাস করা সিয়াম বলেন, তাঁর গোলাপ ফুলের মান ভালো। প্রতিটি গোলাপ ৬০ টাকার নিচে বিক্রি করছেন না। দুটি করে গোলাপ, কসমস ও গাঁদা ফুল দিয়ে তৈরি ক্রাউন (মুকুট) বিক্রি করছেন ১২০ টাকায়।
মোটরসাইকেল থেকে নেমে পাশের আরেকটি দোকান থেকে একজনকে গোলাপ কিনতে দেখা যায়। তিনি গোলাপটি কিনেছেন ৫০ টাকায়। অবশ্য ফুলের দাম নিয়ে কারও কারও আপত্তি ছিল। একজন বললেন, ফুলের দাম মাত্রাতিরিক্ত। তবু প্রিয়জনদের জন্য বিশেষ দিনে ফুল তো কিনতেই হয়।
এ ধরনের বিশেষ দিনগুলোতে হাতিরঝিলে ব্যাপক ভিড় হয়। তাই অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নেওয়া হয়েছিল বাড়তি ব্যবস্থা। হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, দুটি চেকপোস্ট বসানোর পাশাপাশি টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন স্পটে থাকছে পুলিশ।