বেলতলায় চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে সূচনা হয়েছে শ্রীশ্রী দুর্গাষষ্ঠীর। এর মধ্য দিয়েই মূলত শুরু হলো বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার।
আজ বুধবার সকাল নয়টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুর্গামণ্ডপের সামনে থাকা বেলতলায় চণ্ডীপাঠ ও চণ্ডীপূজা শুরু হয়। চণ্ডীপূজায় ছিল নানা রকম ফুল ও ফলের সমরাহ। ধূপ ও প্রদীপেও আচ্ছন্ন ছিল চণ্ডীপূজা।
এ সময় বাজতে থাকে ঘণ্টা, কাঁসর, শঙ্খ, ঢাক ও ঢোলের বাদ্য। উলুধ্বনিতেও মুখর হয়ে ওঠে বেলতলা।
ঢাকেশ্বরী দুর্গামণ্ডপের প্রধান পুরোহিত ধর্মদাস চট্টোপাধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, বেলতলায় দুই দিন ধরে পূজা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলতলায় দেবীর বোধন হয়েছে। আজ ষষ্ঠীর সকালে বেলতলায় চণ্ডীপাঠ ও চণ্ডীপূজা হলো।
ধর্মদাস চট্টোপাধ্যায় জানান, আজ সন্ধ্যায় বেলতলায় দুর্গাদেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস হবে। তখন দেবীকে আসার জন্য প্রার্থনা করা হবে। প্রার্থনার পরিপ্রেক্ষিতে দেবী ঘটে (পাত্রবিশেষ) এসে অবস্থান নেবেন। পরে সেই ঘট, বেলপাতা, ডালসহ নবপত্রিকা মূল মন্দিরে স্থাপন করা হবে।
ঢাকেশ্বরী দুর্গামণ্ডপ সকাল সাড়ে আটটার দিকে খুলে দেওয়া হয়; যদিও তারও আগে থেকেই ভক্ত ও দর্শনার্থীরা পূজামণ্ডপে আসতে থাকেন। তাঁরা এসে মণ্ডপে ভক্তিভরে প্রণতি করছেন। প্রণতি শেষে টিটু রঞ্জন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, তিনি প্রতিমা দেখতে ও অঞ্জলি দিতে এসেছেন।
২ অক্টোবর শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। এরপর গতকাল বোধনের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে জাগ্রত করা হয়।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার মহাসপ্তমী। আগামী শুক্রবার মহাষ্টমী ও শনিবার মহানবমী। তবে পঞ্জিকামতে, এবার শনিবার মহানবমী পূজার পরই দশমী বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হবে। বিজয়া দশমী উদ্যাপন করা হবে আগামী রোববার। সেদিন বিকেলে বিজয়া শোভাযাত্রা বের হবে।
এবার দেবী দুর্গার আগমন হয়েছে দোলায় বা পালকিতে এবং গমন ঘোটক বা ঘোড়ায়।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, এবার সারা দেশে ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা হচ্ছে। গত বছর ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপ ও মন্দিরে দুর্গাপূজা হয়েছিল।
এবার ঢাকা মহানগরে ২৫২টি মণ্ডপ-মন্দিরে দুর্গাপূজা হচ্ছে। গত বছর ঢাকা মহানগরে ২৪৮টি মণ্ডপ-মন্দিরে পূজার আয়োজন করা হয়েছিল।