১২ স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে

মেট্রোরেল
ফাইল ছবি

এবার মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু হলো। গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলে চড়ে এই পথে যাত্রার উদ্বোধন করেন। আজ রোববার থেকে সাধারণ যাত্রী নিয়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে মেট্রোরেল। এ যাত্রাপথে প্রথম দফায় ১২ স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে।

গত বছর ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই পথে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল করছে। তবে আজ আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ চালুর পর মেট্রোরেল দিনে চার ঘণ্টা চলাচল করবে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। তবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলাচল অব্যাহত থাকবে।

মেট্রোরেলে ভ্রমণের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল স্টেশন পর্যন্ত ভ্রমণে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। উত্তরা থেকে সচিবালয়ের ভাড়া ৯০ টাকা। উত্তরা থেকে ফার্মগেটের ভাড়া ৭০ টাকা।

মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুরুতে ফার্মগেট, সচিবালয় ও মতিঝিল—এই তিন স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে। বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি—এই চার স্টেশন আগামী তিন মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে টিএসসি স্টেশন আগে চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর কারওয়ান বাজার স্টেশন চালু হতে পারে।

অন্যদিকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের ৯টি স্টেশনের সব কটিতেই এখন যাত্রী ওঠানামা করছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মোট ১৬টি স্টেশন রয়েছে। মেট্রোরেল মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ২০২৫ সালে তা চালু হতে পারে। তখন আরেকটি স্টেশন যুক্ত হবে।

মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শুরুতে ফার্মগেট, সচিবালয় ও মতিঝিল—এই তিন স্টেশনে মেট্রোরেল থামবে।

মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সূত্র বলছে, উত্তরা থেকে মতিঝিলের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এখন গড়ে ১৭ মিনিট সময় লাগছে। সব কটি স্টেশন চালু হলে ওঠানামাসহ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যেতে ৩৮ মিনিট সময় লাগবে।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে আগারগাঁও স্টেশনে সবুজ পতাকা নেড়ে মতিঝিল স্টেশন অভিমুখে মেট্রোরেলের ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন। সেখানে তিনি ওই পতাকায় স্বাক্ষর করেন। পরে তিনি ফিতা কেটে ট্রেনে উঠে বেলা ২টা ৪০ মিনিটে মতিঝিলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।

বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, উদ্বোধনী যাত্রায় নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার মেট্রোরেল চালুর এই উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে সবাই সহজে যাতায়াত করতে পারে, কাজের সময় বাঁচাতে পারে, যানজট থেকে মুক্তি পেতে পারে এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী জাপান সরকার, ওই দেশের আন্তর্জাতিক ঋণদান সংস্থা জাইকা, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি মেট্রোরেলের কাজের সঙ্গে জড়িত সব ব্যক্তি ও শ্রমিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী ট্রেনটি মতিঝিল স্টেশনে পৌঁছায় বেলা ৩টা ৬ মিনিটে। এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আগারগাঁও স্টেশনে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। ট্রেনে চড়ার আগে প্রধানমন্ত্রী আগারগাঁও স্টেশনে ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট সংগ্রহ করেন।

এরপর মতিঝিল স্টেশনে নেমে প্রধানমন্ত্রী এমআরটি লাইন-৫ (উত্তর রুট) নির্মাণকাজেরও উদ্বোধন করেন, যা সাভারের হেমায়েতপুর থেকে গাবতলী, মিরপুর-১০, গুলশান হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার লাইন হবে। এই লাইনের বেশির ভাগ অংশ নির্মিত হবে পাতালপথে।

উল্লেখ্য, উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা।

মেট্রোরেলে ভাড়া

মেট্রোরেলে ভ্রমণের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। আর উত্তরা থেকে মতিঝিল স্টেশন পর্যন্ত ভ্রমণে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। উত্তরা থেকে সচিবালয়ের ভাড়া ৯০ টাকা। উত্তরা থেকে ফার্মগেটের ভাড়া ৭০ টাকা।

অন্যদিকে আগে চালু হওয়া উত্তরা নর্থ স্টেশন (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া ৬০ টাকা। মাঝের সাতটি স্টেশনের জন্য আলাদা ভাড়া নির্ধারণ করা আছে।