কোনো ভারী যন্ত্র ব্যবহার না করে গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত কুইন স্যানিটারি মার্কেটে তৃতীয় দিনের উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাততলা ভবনের বেজমেন্টে জমে থাকা পানি অপসারণ শুরু করেন তাঁরা।
গত মঙ্গলবার বিস্ফোরণের পর গতকাল বুধবার পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান শেষ করতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির বেজমেন্টে উদ্ধার অভিযান চালাতে প্রয়োজন শোরিং (ঠেক দেওয়ার) নামের বিশেষ যন্ত্রের, যা ফায়ার সার্ভিসের কাছে নেই।
আজকের উদ্ধার অভিযানের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের ভাইস প্রিন্সিপাল আনোয়ারুল হক বলেন, সকাল সাড়ে আটটায় কাজ শুরু হয়েছে৷ ওই সময় ভবনের নিচে প্রচুর পানি থাকায় সেগুলো সেচে তারপর উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়েছে। কোনো ভারী যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে না।
আজ সকাল নয়টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বালতিতে করে বেজমেন্টের পানি অপসারণ করছেন। ভবনের ভাঙা অংশও বালতিতে ভরে বের করে আনছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ’ লেখা ব্যানার টানিয়ে দিয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের বেজমেন্টের দোকান বাংলাদেশ স্যানিটারি ম্যানেজার মেহেদী হাসান স্বপনের এখনো খোঁজ মেলেনি। স্বপনের ভাই সোহাগ, শ্যালক নুরুন্নবী ও মামাশ্বশুর আবদুল মান্নান আজকেও ঘটনাস্থলে এসেছেন। তাঁরা সার্ভিসের কর্মীদের কার্যক্রম দেখছিলেন আর বারবার চোখের পানি মুছছেন।
রাজউকের গঠিত কার্যকরী কমিটির সদস্যরা গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সাততলা ভবনে ২৪টি কলাম আছে, এর মধ্যে ৯টি কলাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যান্য কলামেও প্রভাবে পড়েছে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।
গত মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে কুইন স্যানিটারি মার্কেট হিসেবে পরিচিত সাততলা ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশের সাততলা ও পাঁচতলা দুটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কুইন মার্কেটের সাততলা ভবনটির বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়। রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।