মামলা নিষ্পত্তিতে অযথা বিলম্ব না করে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আজ সোমবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগের বাংলাদেশ পুলিশ মিলনায়তনে ডিএমপির আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভায় মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির পাশাপাশি থানা এলাকার অপরাধের ধরন বিশ্লেষণ করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে থানাগুলোকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে মানুষকে সেবা দিতে বলা হয়।
অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান। তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ক্রান্তিকাল পার হয়ে বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছি। আর এটি আপনাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে।’
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সাধারণ মানুষের কাছে না গেলে তথ্য পাওয়া যাবে না। এ জন্য নাগরিকদের কাছে যেতে হবে ও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
থানার কাজের কথা স্মরণ করিয়ে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, থানার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সমাজে অপরাধ ঠেকাতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পাশাপাশি অপরাধের সঠিক কারণ নির্ণয়, অপরাধীকে আইনের আওতায় আনার জন্য তদন্ত ও অনুসন্ধান করাও তাদের কাজ। এই কাজগুলো যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
অপরাধ পর্যালোচনা সভায় উপস্থিত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) উদ্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) ফারুক আহমেদ বলেন, পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষায় থানার অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে থানা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সফল হবে, সে থানার ওপর জনসাধারণের তত বেশি আস্থা তৈরি হবে। এ জন্য প্রত্যেককে যার যার অবস্থান থেকে অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। সবাইকে পরিবর্তনের অংশীদার হতে হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ইসরাইল হাওলাদার বলেন, সামনে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজা যাতে নির্বিঘ্নে উদ্যাপন করতে পারে, সে জন্য এখন থেকেই সবাইকে সতর্ক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করতে হবে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করবেন এবং কমিটির সঙ্গে কথা বলবেন। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।
অপরাধ পর্যালোচনা সভায় গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন বিভাগের পুলিশ সদস্যদের পুরস্কৃত করা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিক, অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নজমুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলীসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যরা।