অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর
অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর

অধ্যাপক সৌমিত্র শেখরের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তে দুদক

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সৌমিত্র শেখর, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক এপিএস গাজী হাফিজুর রহমানের (লিকু) বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের তথ্য অনুযায়ী, অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় ভর্তি–বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া সৌমিত্র শেখরের বিরুদ্ধে এক ঠিকাদারের সোনালী ব্যাংকের আমানত রূপালী ব্যাংকে স্থানান্তরে প্রতি কোটিতে ৫০ হাজার টাকা করে কমিশন আদায়, গাড়ির জ্বালানির জন্য বরাদ্দ দেওয়া সরকারি তহবিল আত্মসাৎ এবং অবৈধ অর্থে শেরপুরে জমি কিনে ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরি করার অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকার ধানমন্ডি ও উত্তরায় একাধিক ফ্ল্যাটের মালিকানা এবং শেরপুরে সম্পত্তির প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

অপর দিকে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে নিয়োগ–বাণিজ্যসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দুদকের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় হলফনামা অনুযায়ী তাঁর বার্ষিক আয় ছিল মাত্র ১৫ হাজার টাকা। ১০ বছর পর ২০২৪ সাল নাগাদ তা বেড়ে ৩২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

এ ছাড়া মোস্তাফিজুর রহমানের নামে ৩৭ লাখ টাকার একটি টয়োটা প্রাডো জিপ, ৮৪ লাখ টাকার একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার স্টেশন ওয়াগন, পৈতৃক সূত্রে ৪ একর জমি, নিজ নামে রাজউকের ৩ কাঠার প্লট, ১৪ গন্ডা অকৃষি জমি, ৪ কাঠার প্লট ও চকবাজার সুপারমার্কেটে দোকান রয়েছে। স্ত্রীর নামে ৫ তলা বাড়ি ও ঢাকার কাফরুলে ১ হাজার ৮৭২ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে।

এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস থাকা অবস্থায় গাজী হাফিজুর রহমান ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুদক। দুদকের তথ্যমতে, গাজী হাফিজুর রহমান এবং তাঁর স্ত্রী মোহাম্মদপুরের মধু সিটি ও উত্তরায় একটি সরকারি প্লট অবৈধভাবে অধিগ্রহণ করেছেন। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ‘মেসার্স রাফি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজের’ নামে কয়েক শ বিঘা জমি রয়েছে তাঁদের।

গোপালগঞ্জে হাফিজুর রহমানের পৈতৃক জমিতে পাঁচতলা বাড়ি, মোহাম্মদপুরে ছয়তলা ভবন, কুয়াকাটা লাইট হাউসের কাছে ওশান ব্লু রিসোর্টে বিনিয়োগ এবং তাঁর শ্যালকের মালিকানাধীন ছয়তলা আবাসিক ও ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবনের প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুদক। এ ছাড়া নামে-বেনামে নিজের ও বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের নামে বিপুল সম্পদ রয়েছে বলে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।