ঈদ উপলক্ষে দরজিবাড়িতে ব্যস্ততা বেড়েছে। গত বুধবার রাজধানীর বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ার মার্কেটে
ঈদ উপলক্ষে দরজিবাড়িতে ব্যস্ততা বেড়েছে। গত বুধবার রাজধানীর বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ার মার্কেটে

ব্যস্ততা এখন দরজিবাড়ি ঘিরে 

ঈদের প্রস্তুতির রেশ সবকিছুর আগে শুরু হয় দরজিবাড়িতে। একটু আগে আগে পোশাক তৈরির জন্য গেলে দরজিরা পোশাকটি মনোযোগ দিয়ে বানান। তাড়াহুড়ায় পোশাকে মনমতো নকশায় ত্রুটি হতে পারে।

এমন ধারণা থেকে মাপমতো পোশাক বানাতে আগ্রহী নারী–পুরুষ রোজার শুরুর দিকেই দরজিবাড়িতে হাজির হন। তাই বলে শুরুতেই শুধু দরজিবাড়িতে ভিড় এবং পরে ভিড় কমে বিষয়টি তা নয়। কারণ, নিয়মিত গ্রাহকদের ফেরান না দরজি। আর ঈদের সময় রোজগার বেশি হয় বলে গ্রাহকের হাতে পছন্দের পোশাকটি তুলে দিতে কর্মঘণ্টা বাড়ে দরজিবাড়িতে। বুধবার রাজধানীর দরজিবাড়ি ঘুরে সেই চিত্রই পাওয়া গেল।

শাহজাদপুর এলাকার সুবাস্তু নজর ভ্যালির ‘সিটি টেইলার্স’–এ দেখা হয় ভাটারার বাসিন্দা নূরজাহানের সঙ্গে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে চারটি ব্লাউজ বানিয়েছেন। এখন এসেছেন মেয়ে ও তাঁর নিজের জন্য কয়েকটি থ্রি–পিস বানাতে। সিটি টেইলার্সের মাস্টার (প্রধান দরজি) আসাদুর রহমান বললেন, ঈদ উপলক্ষে অর্ডার তুলনামূলক বেশি। রাতে বিপণিবিতান তিন ঘণ্টা বেশি খোলা থাকছে। তাঁরা রাত ১১টা পর্যন্ত পোশাক বানানোর কাজ করছেন।

দরজির দোকান ঘুরে দেখা যায়, কাপড় কাটার লম্বা টেবিলে চলছে চক ও ফিতা দিয়ে মেপে কাপড় কাটা। অনেকে ক্যাটালগ দেখে নকশা বাছাই করেন। এর সঙ্গে আবার বাড়তি লেসজুড়ে পোশাককে আরও আকর্ষণীয় বানান। এক নারীকে দেখা গেল, দরজির দোকান থেকে শুনে নিয়ে ছুটলেন ডিজাইন করার জন্য বাড়তি কাপড় কিনতে। আরেক নারী ঘুরছিলেন মানানসই লেস কিনতে।

দরজির দোকানে কাপড় কাটার বড় টেবিলের পেছনে শোকেসে কাটা কাপড় পুটলি করে বেঁধে থরে থরে রাখা। এক পাশে সেলাই মেশিন থেকে আসা টানা যান্ত্রিক সুর ঈদের ব্যস্ততা জানান দিচ্ছিল। 

 ভাটারা থানার ছোলমাইদে জব্বার মোল্লা টাওয়ারে অবস্থিত ‘প্রজ্বলন বুটিকস অ্যান্ড টেইলার্স’ ঈদ উপলক্ষে ১৫০ টাকা পর্যন্ত মজুরি বাড়িয়েছে। সুতি কাপড়ের ব্লাউজ বানাতে সেখানে মজুরি নেওয়া হয় ৬০০ টাকা। ভেতরে লাইলিন দেওয়া সিল্ক ধরনের কাপড় হলে ব্লাউজের মজুরি ১ হাজার ২০০ টাকা। নকশা করালে মজুরি ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। দোকানটির স্বত্বাধিকারী ওয়াসিম উজ জামান জানান, জামার গলা, হাত ও পায়জামায় বিভিন্ন নকশা করে দিতে ক্যাটালগ নিয়ে আসেন অনেকে। নকশা বেশি হলে জামা বানাতে সময় লাগে বেশি। তাই মজুরিও বেশি হয়।

 তবে দরজির দোকান বলতে হ্যাঙ্গারে পোশাক ঝুলিয়ে রাখার যে দৃশ্য চোখের সামনে চলে আসে, সেটি দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি টেইলার্সের আসাদুর রহমানের দাবি, অনেক গ্রাহক অনেক খুঁজে নিজের জন্য নানান নকশা দিয়ে পোশাক বানান। পোশাক ঝুলিয়ে রাখলে নকশা নকল হয়ে যায়। এ কারণে এখন পোশাক ঝুলিয়ে রাখার চল কম।