২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ‘পণ্ডিত বিরজু মহারাজ ত্রয়োদশ কত্থক নৃত্য উৎসব’-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানানো হয়
২৪ থেকে ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ‘পণ্ডিত বিরজু মহারাজ ত্রয়োদশ কত্থক নৃত্য উৎসব’-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলনে এমনটি জানানো হয়

মঙ্গলবার ঢাকায় ‘পণ্ডিত বিরজু মহারাজ ত্রয়োদশ কত্থক নৃত্য উৎসব’ শুরু

আগামী মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিন রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তন ও রবীন্দ্রসরোবরে অনুষ্ঠিত হবে ‘পণ্ডিত বিরজু মহারাজ ত্রয়োদশ কত্থক নৃত্য উৎসব’। উৎসবের আয়োজন করছে ‘কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়’। রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটি অনুষ্ঠানের সূচি ঘোষণা করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পরিচালক সাজু আহমেদ বলেন, আগামী মঙ্গল ও বুধবার (২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডির ছায়ানট মিলনায়তনে এবং বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে ‘পণ্ডিত বিরজু মহারাজ ত্রয়োদশ কত্থক নৃত্য উৎসব’ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে অনুষ্ঠান শুরু হবে।  
বৃহস্পতিবারের আয়োজন নিয়ে সাজু আহমেদ বলেন, রবীন্দ্রসরোবরে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেলেও স্টেজের লোকদের কাছ থেকে অনুমতি পাননি। সেদিন টিএসসিতে প্রোগ্রাম করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর রবীন্দ্সরোবরে অনুমতি পেলে ভাগাভাগি করে দুই জায়গাতেই প্রোগ্রাম করা হবে।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত শীর্ষস্থানীয় নৃত্যশিল্পীরা অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করবেন। নৃত্যকলায় জাতীয় পর্যায়ে নৃত্য প্রতিযোগিতায় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশু-কিশোরেরাও এই উৎসবে অংশগ্রহণ করবে। এ ছাড়া উৎসবে একজন নৃত্যগুণীকে কত্থক নৃত্যগুরু জিনাৎ জাহান স্মৃতি সম্মাননা পদকে ভূষিত করা হবে।

সাজু আহমেদ বলেন, কত্থক নাচে হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের সংস্কৃতির প্রতিফলন থাকে। সাধারণত কথাগুলো হিন্দু পুরাণ আশ্রিত হয় আর পোশাকে থাকে মুসলিম সংস্কৃতির ছাপ।  

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষক মনিরা পারভীনসহ কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়ের শিল্পীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রথম দিনের অনুষ্ঠান সূচি

১. প্রভু বন্দনা–কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ২. বিষাদে-আনন্দে-বিজয়ে (৫২-২৪)-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ৩. প্রথম ছন্দ-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ৪. গানের নাচ-রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়, ৫. আদিবাসী নাচ-রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৬. নৃত্যনাট্য (প্রসঙ্গ ৪৭)-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়।

দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান সূচি

১. গুরু বন্দনা- কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ২. ছন্দ মালিকা, ৩. একক-প্রকৃতি, ৪. প্রথম ছন্দ (ছোট), ৫. প্রথম ছন্দ (বড়), ৬. মেলবন্দনা, ৭. বিষম ছন্দ, ৮. ঝাপতাল, ৯. একক-শ্রুতি, ১০. নূপুর নিক্বণ-মৌলভীবাজার, ১১. গন্তব্য-পাবনা, ১২. টুকরা মালিকা, ১৩. গহন কুসুম, ১৪. নিটোল পায়ে, ১৫. আমি যার নূপুরের ছন্দ-রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৬. শুভ্র ছন্দ, ১৭. বিষাদে-আনন্দে-বিজয়ে (৫২-২৪) ১৮. একক-ইমামা, ১৯, নটরাজ- নৃত্যকলা কেন্দ্র, নোয়াখালী এবং ২০. বৃন্তের ছন্দ।

তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানসূচি

১. বাসানত তারানা-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ২. বিষাদে-আনন্দে-বিজয়ে (৫২-২৪)-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ৩. টুকরা মালিকা-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ৪. ছন্দমালিকা-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ৫. দিপা সরকার, ৬. মধুর ধ্বনি-রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়, ৭. মনিরা পারভীন হ্যাপি, ৮. পার্থ দাস, ৯. নটরাজ-নৃত্যাঙ্গন একাডেমি,চট্টগ্রাম, ১০. রেওয়াজ পারফরম্যান্স স্কুল,১১. শুভ্র ছন্দ-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ১২. নিটোল পায়ে-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ১৩ পরম্পরা নৃত্যালয়, ১৪. কাথ্যাকিয়া ও ১৫. মালকোশ তারানা-কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়।

কত্থক নৃত্য হলো উত্তর ভারতের একটি ধ্রুপদি নৃত্যশৈলী। এই নৃত্যশৈলীতে নৃত্যশিল্পী গল্প বলার মাধ্যমে দর্শকদের মনোরঞ্জন করেন। কত্থক নৃত্যের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এর দ্রুত পদচারণ, জটিল তাল বা রিদম, তবলার সঙ্গে সমন্বয়, ঘূর্ণি এবং নৃত্য কৌশলে অভিব্যক্তির প্রকাশ। কত্থক নৃত্য মূলত মন্দির এবং রাজদরবারে বিকশিত হয়েছে। মোগল আমলে এই নৃত্যের রীতিতে কিছু পারস্য ও মধ্য এশিয়ার প্রভাব যুক্ত হয়েছে।