অভিনয়শিল্পী হোমায়রা হিমুর সঙ্গে তাঁর বন্ধুর দুই কারণে মনোমালিন্য চলছিল। তবে তিনি আত্মহত্যা করেছেন কি না, ময়নাতদন্তের পর তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। আত্মহত্যার প্ররোচনায় করা মামলার একমাত্র আসামি হোমায়রার বন্ধু মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফি ওরফে উরফি জিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব এসব কথা জানিয়েছে।
হোমায়রার মৃত্যুর ঘটনায় জিয়াউদ্দিনকে গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকার বংশাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব জানিয়েছে, জিয়াউদ্দিন রাসায়নিক সামগ্রীর (কেমিক্যাল) ব্যবসা করেন। জিয়াউদ্দিনের বিষয়ে জানাতে আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বিস্তারিত জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে বিয়েসংক্রান্ত বিষয় এবং অর্থিক বিষয় নিয়ে হোমায়রার মনোমালিন্য চলছিল। এর জের ধরেই হোমায়রা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
র্যাবের পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, জিয়াউদ্দিন ২০১৪ সালে হোমায়রার এক নিকটাত্মীয়কে বিয়ে করেন। সেই সূত্রেই হোমায়রার সঙ্গে জিয়াউদ্দিনের পরিচয় হয়। দুই মাসের মধ্যেই হোমায়রার নিকটাত্মীয় ও জিয়াউদ্দিনের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তবে হোমায়রার সঙ্গে জিয়াউদ্দিনের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। ২০২০ সালে জিয়াউদ্দিন আবার অন্যত্র বিয়ে করেন। বিয়ের পরও হোমায়রার সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যান। চার মাস ধরে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হোমায়রার বাসায় নিয়মিত যেতেন জিয়াউদ্দিন। এ সময়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হতো এবং হোমায়রা প্রায়ই আত্মহত্যার হুমকি দিতেন।
ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ বুধবার রাতেও বাগ্বিতণ্ডার জেরে হোমায়রা আত্মহত্যার হুমকি দেন বলে র্যাবকে জানিয়েছেন জিয়াউদ্দিন। তাঁর বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন বলেন, ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে হোমায়রার বাসায় যান জিয়াউদ্দিন। অর্থসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে বাসায় ভাঙচুর করেন হোমায়রা। একপর্যায়ে রুমের বাইরে থেকে একটি মই এনে সিলিং ফ্যান লাগানোর লোহার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা রশিতে গলায় ফাঁস দেন তিনি। এ সময় জিয়াউদ্দিন রশি থেকে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পাশের কক্ষেই থাকতেন হোমায়রার মেকআপ আর্টিস্ট মিহির। তাঁকে ডেকে এনে হোমায়রাকে নামিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতাল থেকে হোমায়রার গাড়ি ও দুটি মুঠোফোন নিয়ে পলিয়ে যান জিয়াউদ্দিন।
তবে জিয়াউদ্দিনের এসব দাবি সত্য কি না, সেটি তদন্তের পরই জানা যাবে বলে উল্লেখ করেছেন র্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন।